নিজস্ব প্রতিনিধি: সহজেই মিলবে ঋণ। বিভিন্ন চেনা-অচেনা অ্যাপের বিজ্ঞাপণ দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ছে জনতা। আর প্রতারকদের পেতে রাখা ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন বহু মানুষ। এমনকি পুলিশকর্মীরাও এই ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ই-ওয়ালেটেও পাতা হচ্ছে ফাঁদ। প্রতারকরা এমন কিছু ই-ওয়াালেট বেছে নিচ্ছে যা সম্পর্কে পুলিশও ওয়াকিবহাল নয়। এবার অনলাইন প্রতারণা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করল খোদ লালবাজার। কলকাতা পুলিশের তরফে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সতর্কবার্তা জারি করেছে লালবাজার। তাতে রাজ্যবাসীকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ঋণের বিজ্ঞাপণ দেখে বা অচেনা ই-ওয়ালেটে লেনদেন না করতে। একমাত্র চেনা সংস্থার ওয়েবসাইট বা বহুল প্রচলিত ই-ওয়ালেট ব্যবহার করতে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি নতুন ই-ওয়ালেট সম্পর্কে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এই ধরণের অ্যাপ থেকে লেনদেন করে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে গ্রাহকদের। আবার সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার নামে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপণ দেওয়া হচ্ছে। সেখানেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও আধার-প্যান নম্বরের ডিটেলস দিয়ে আবেদন করার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ঋণের টাকা পাওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। এখানেও রয়েছে প্রতারণার ফাঁদ। অনেকেই ঋণ পাচ্ছেন। আবার নতুন করে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছেন প্রতারকদের কাছ থেকে। যেমন বেশি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ বা বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে এক্ষেত্রে।
সূত্রের খবর, সহজ শর্তে ঋণ নেওয়ার পর লেকটাউনের এক তরুণী ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, মাস কয়েক আগে তিনি একটি অ্যাপ তিনি ডাউনলোড করেন এবং ঋণ নেন। টাকা শোধের জন্য তাঁকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ সেই টাকা শোধ করার আগেই অপরিচিত নম্বর থেকে তরুণীকে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। যদি টাকা পরিশোধ না করা হয় তাহলে তাঁর মোবাইলে থাকা সব কনট্যাক্ট নম্বরে ফোন করে তাঁর টাকা ধার নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে। দাবি, নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করার পরই মোবাইলের সব কন্টাক্ট কপি হয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে কোনও অপরিচিত নম্বর থেকে আসা লিঙ্কে ক্লিক না করার আর্জি জানিয়েছে লালবাজার।
অপরদিকে বেশ কিছু এটিএম জালিয়াতির তদন্ত করতে গিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ও বিভিন্ন থানার তদন্তকারীরা দেখেছেন যে, জালিয়াতরা বেছে বেছে ব্যবহার করছে কয়েকটি আনকোরা ই-ওয়ালেট। কিন্তু তদন্তের সময় ওই সমস্ত অ্যাপের কোনও হদিশ পায়নি তদন্তকারীরা। এমনকি ওই ই-ওয়ালেটগুলি সংস্থাকে মেল করেও কোনও উত্তর মিলছে না দাবি পুলিশের। ফলে প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিদের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না পুলিশের পক্ষে। আর এই ভাবে জালিয়াতদের পক্ষে টাকা হাতানো সহজ হয়ে যাচ্ছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কোনও ই-ওয়ালেট সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন করার আগে ওই সংস্থার কাছে রিজার্ভ ব্যাংক এসএসএল শংসাপত্র আছে কিনা জেনে নেওয়া জরুরি।