নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে সভাই তাঁকে চেনে মোদি বিরোধী হিসাবেই। দেশজুড়েই কার্যত মোদির বিকল্প মুখ হিসাবে ক্রমশ উঠে আসছেন তিনি। আর বুধবার বাংলার বিধানসভা নির্বাচনেই তিনি কিনা দিলেন ‘সহযোগিতা’র বার্তা, আর সেটাও গেরুয়া শিবিরকে। স্বভাবতই জল্পনা তো ছড়াবে। যদিও তাঁর দলের ব্যাখা দলনেত্রী জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন। আগে আগে দেখুন কী হয়! নজরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি গেরুয়া শিবিরকে লক্ষ্য করে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘সামনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন(President Election) আছে। আমাদের সকলের সহযোগিতা না পেলে কিন্তু আপনাদের যথেষ্ট চিন্তার কারণ আছে। বেশি লাফাবেন না।’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে যে ‘সহযোগিতা’র কথা বলেছেন সেই সূত্রেই জল্পনা ছড়িয়েছে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে। অনেকেই মনে করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কার্যত বিজেপিকে বার্তা দিয়ে রাখলেন যাতে তাঁরা গায়ের জোরে কিছু করতে না যায়। বরঞ্চ সর্বসন্মতি সাপেক্ষে কাউকে যেন দেশের রাষ্ট্রপতি করা হয়।
চলতি বছরের ২৪ জুলাই শেষ হচ্ছে দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের(Ramnath Kovind) কার্যকালের মেয়াদ। তাঁর পদে কে আসবেন তা নিয়ে কার্যত দেশজুড়েই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের ৫ রাজ্যের ভোট মেটার পর থেকেই। বিজেপি(BJP) সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরা হতে পারে দেশের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে। এরই পাশাপাশি রাজ্যসভায় তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি ও আম আদমি পার্টিকে নিয়ে পৃথক একটি বিরোধী ব্লক গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে বিজেপি একক ভাবে কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরলে এই ব্লকের তরফেও কাউকে তুলে ধরা হতে পারে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসকে হয়তো প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে তাঁদের প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সেই সম্ভাবনার কথাই আদতে তুলে ধরেছেন বলে এদিন দাবি করেছে তৃণমূল। যদিও কংগ্রেসের দাবি, মমতা বিজেপিকেই সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ঘটনা হচ্ছে বিজেপি এখনও একক ভাবে রাষ্ট্রপতি পদে কাউকে জিতিয়ে আনার মতো অবস্থায় নেই। কেননা রাজ্যসভায় তাঁরা যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, তেমনি উত্তরপ্রদেশে তাঁদের আসন কমেছে। এই অবস্থায় বিজেপির প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে এনডিএ(NDA) বহির্ভূত দলগুলির সমর্থন দরকার হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই সব দল প্রার্থীর বিষয়েও নিজেদের মত চাপিয়ে দিতে চাইবে। বিজেপির ঘরের লোককে তারা সমর্থন নাও দিতে পারে। আর এখানেই মমতা নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন। কার্যত বুঝিয়ে দিলেন বাজপেয়ীজির আমলে যেমন এ পি যে আব্দুল কালামকে যেমন সর্বসন্মতিক্রমে দেশের রাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরা হয়েছিল, এবারেও যেন সেরকম কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরা হয়। অন্যথা তৃণমূল ভিন্ন পথ ধরবে যাতে বিজেপি সমস্যায় পড়ে যাবে। এখন দেখার বিষয় মমতার এদিনের ঘোষণাকে বিজেপি কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে।