নিজস্ব প্রতিনিধি: আদালতের রায় ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল বাংলাজুড়ে। কেননা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল বা জাতীয় পরিবেশ আদালত(National Green Tribunal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জরিমানা(Environmental Compensation) ধার্য করেছে। শুধু তাই নয়, আগামী ২ মাসের মধ্যে সেই টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে। পরিবেশের ক্ষতিসাধণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই মোটা টাকার জরিমানা করা হয়েছে। আদালতের অভিযোগ, বাংলার সরকার তরল এবং সব ধরনের বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে(Waste Management) ব্যর্থ। এতে পরিবেশের অপরিসীম ক্ষতি হচ্ছে। তাই ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে তাঁরা। আগামী দুই মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ওই টাকা মেটাতে হবে। তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court Of India) মামলা দায়ের করা হচ্ছে। কেননা জরিমানার পরিমাণ অবিশ্বাস্য ও অস্বাভাবিক বলেই তাঁদের মনে হয়েছে।
দেশের জাতীয় পরিবেশ আদালতের দাবি, বাংলায় ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিকাশি প্রণালীকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। ২০২২-‘২৩ অর্থবর্ষের বাজেটে নগর এবং পুরসভা এলাকার উন্নয়নের জন্য ১২ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না মমতার সরকার। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় ভবিষ্যতের জন্য ফেলে রাখা উচিত নয়। তাই এই জরিমানা। এই বিষয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন তথা বিচারপতি এ কে গোয়েল জানিয়েছেন, ‘নাগরিকদের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব সাংবিধানিক ভাবেই রাজ্যের ওপর পড়ে। দূষণমুক্ত পরিবেশে প্রাণ খুলে শ্বাস নেওয়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। অর্থের ঘাটতির দোহাই দিয়ে তা থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা যায় না। পরিবেশের ক্ষতিসাধন রুখতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, আগের ভুলের মাশুলও দিতে হবে রাজ্যকে। তাই জরিমানা করা হচ্ছে। এর পরও ঢিলেমি চোখে পড়লে, অতিরিক্ত জরিমানাও করা হবে।’
জাতীয় পরিবেশ আদালতের তরফে আরও বলা হচ্ছে, ‘অনেক দিন আগেই সমস্যা চিহ্নিত করেছিল ট্রাইব্যুনাল। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছিল। এ বার রাজ্য সরকারের নিজের আইনি দায়-দায়িত্ব অনুধাবন করা উচিত। নিজেদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে তাদের।’ উল্লেখ্য, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ২০১৬ সালের বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রণয়ন হচ্ছে কি না, তার ওপর নজরদারি চালিয়েই বাংলায় আইন লঙ্ঘন চোখে পড়েছে বলে রিপোর্ট জমা পড়ে। তার পরই এমন নির্দেশ। যদিও এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে।