নিজস্ব প্রতিবেদক: মদ্যপ (Drunk) অবস্থায় চলছিল রাতসফর। এলোপাথাড়ি গাড়ি চলাচল দেখেই সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। তাই কোনও মতে গাড়ি থামিয়ে চালক যুবকের মুখে ব্রেথ অ্যানালাইজার ধরে পুলিশ। পরিমাপ প্রায় ১৫০। গাড়িতে থাকা সঙ্গিনীর অবস্থাও টালমাটাল। ওই অবস্থাতেই যাদবপুর থানাতে নিয়ে আসা হয় দুজনকে। তবু হুঁশ নেই মত্ত যুগলের। থানাতেই রাতভর চলল তাণ্ডব। মারধর, গালিগালাজের ফোয়ারা ছুটতে থাকে পুলিশকে লক্ষ্য করে। এমনকি রক্ষে নেই মহিলা পুলিশকর্মীদেরও। তাদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। পরিস্থিতি এমন, যে থানায় ছুটে আসতে হয় আধিকারিকদেরও। তাঁদের আটক করার জন্য পুলিশকে রীতিমত হুমকি দেওয়া হয়। নিজেদেরকে প্রভাবশালী বলে পরিচয় দেন ধৃতরা।
দীর্ঘ সময় ধরে এই পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হচ্ছে না দেখে চালক সৌমেন ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার (Arrest) করে পুলিশ। সঙ্গিনীর বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধেই পুলিশকে মারধর, শ্লীলতাহানি এবং মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে অবস্থায় গাড়িতে সফর করছিলেন মদ্যপ যুগল, তাতে যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারত বড় রকমের দুর্ঘটনা। তাই তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়। আর তারপরেই চলে উদ্দাম তাণ্ডব।
সম্প্রতি রাতে গাড়ি (Drive) চালনো নিয়ে বিশেষ সতর্ক হয়েছে পুলিশ। বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে, চালকরা মদ্যপ কি না সেই দিকে। নিয়মমাফিক যাদবপুর থানার নাকা চেকিং-এ দাঁড় করানো হয় গাড়ি। ব্রেথ অ্যানালাইজারে পরিমাপ ওঠে ১৫০। পুলিশ জানিয়েছে, স্বাভাবিক পরিমাপ ৩০ হয়। তাই বোঝাই যাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপ ছিলেন ওই যুগল। অভিযুক্তরা ঢাকুরিয়া থেকে গড়িয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। জানা গিয়েছে ধৃতের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুরে। আরও জানা গিয়েছে, এই মত্ত অবস্থা দেখে বিপদের আশঙ্কায় তাঁদের গাড়ি আটক করে পুলিশ। চালক ও তাঁর সঙ্গিনীকে বলা হয় গাড়ি থেকে নামতে। আর নেমেই গালিগালাজ ও তাণ্ডব শুরু করেন যুগল। তাঁদের কোনও মতে নিয়ে আসা হয় থানায়। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কেস দিয়ে তাঁদের গাড়ি আটক করে অন্য গাড়ি করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল পুলিশ।
জানা গিয়েছে, থানায় নিয়ে আসার পর গালিগালাজ ও চিৎকার শুরু করেন যুগল। চলে ধ্বস্তাধস্তি। তাদের বাধা দিতে এলে এক মহিলা পুলিশকর্মীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। অবশেষে গভীর রাতে তাঁদের নেশা কাটলে শুরু করা হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
জিজ্ঞাসাবাদ থেকে জানা গিয়েছে, সঙ্গিনীকে বাড়ি ছাড়তে যাচ্ছিলেন যুবক। দক্ষিণ কলকাতার এক ক্লাবে তাঁরা মদ্যপান করেছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, থানা ও রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। তা প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হবে।