নিজস্ব প্রতিনিধি: জন্মরুগ্ন একরত্তি। খালি চোখে গোনা যাচ্ছিল পাঁজর। আর সে একরত্তির দেহে মাংস লাগিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন চিকিৎসকরা। এসএসকেএমের (SSKM) নিউনেটাল বিভাগ এতেই কুড়োচ্ছে প্রশংসা। এই লড়াইটা ছিল টানা ৬০ দিনের! পুরুলিয়ার শিশু এখন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। চিকিৎসক (Doctor) এবং চিকিৎসাকর্মীদের ইশ্বরজ্ঞাণে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন শিশুর পরিবার।
জানা গিয়েছে, সুদূর পুরুলিয়া থেকে মালা দাস ছুটে এসেছিলেন কলকাতায়। শিশুকে নিয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন এসএসকেএম- এর। শিশুর বয়স মাত্র ২ মাস। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুর ওজন কমছিল ক্রমাগত। কিছু খেতেও চাইত না শিশু। দেহে স্পষ্ট গোনা যেত হাড়। জন্ম রুগ্ন শিশুর মাকে আস্থা জুগিয়েছিল হাসপাতালের নিউনেটাল বিভাগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন একরত্তির শরীরে বাসা বেঁধেছে একাধিক রোগ। তাকে বাঁচিয়ে তোলা সহজ ছিল না। জানা গিয়েছে, শিশুর সোডিয়াম পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গিয়েছিল। দেখা গিয়েছিল ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স, মিকোনিয়াম আইলিয়াস। সোজা কথায় খাদ্যনালির রস শুকিয়ে গিয়ে জমাট বেধে শক্ত হয়ে গিয়েছিল। আরও জানা গিয়েছে, ওই একরত্তির পেরিস্টালসিস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মানে হজম করা সম্ভব ছিল না। ওই শিশুর মলত্যাগের নালিতেও ছিল ফুটো। তাও আবার তা মায়ের গর্ভে থাকাকালীন। ফলে মল দেহের বাইরে না বেরিয়ে পেটেই বারিয়ে যেত। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির দেহে ২ টি অস্ত্রপচার করা হয়েছে। প্রথম অস্ত্রপচার হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি। তারপর অপারেশন করা হয় ৩১ মার্চ। প্রথম পর্যায়ে মল দেহের বাইরে বের করার জন্য নল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টোটাল প্যারেনটেরাল নিউট্রিশন পদ্ধতিতে শিশুটিকে ২ মাস রাখা হয়েছিল। ওই শিশু মায়ের দুধ পর্যন্ত পান করতে পারত না, বলেও জানা গিয়েছে। চিকিৎসা দীর্ঘ ২ মাস ধরে চলাকালীন খুদের শিরা দিয়ে খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অবাক করার কথা এই চিকিৎসার জন্য খরচ হয়েছে মাত্র ২ টাকা! অথচ বেসরকারি নার্সিংহোমে খরচ প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এখন ওজন বাড়ছে ওই শিশুর। শুধু তাই নয় খুদে এখন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।