নিজস্ব প্রতিনিধি: ইচ্ছে ছিল হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ে চাকরি করার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় ছেলের ইচ্ছে পূরণ করতে পারেনি বাবা। আর সেই কারণে অভিমানে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করা এক পড়ুয়া। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত পড়ুয়ার নাম শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়। ১৮ বছর বয়স তাঁর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার ফরতাবাদের বাসিন্দা ওই তরুণ। তাঁর বাবা স্নেহাংশু মুখোপাধ্যায় ওই এলাকারই একটি ওষুধের দোকানে কাজ করেন। শুভ্রাংশুর বাবা চাইতেন ছেলে পড়াশোনা চালিয়ে যান। কিন্তু ছেলের হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার ইচ্ছেতে পরিবারের সম্মতি থাকলেও আর্থিক সামর্থ ছিল না। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, ছেলের ইচ্ছে ছিল হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ে পাশ করার পর একটি হোটেলে চাকরি করার। এরপর নিজের উদ্যোগে একটি রেস্তরাঁ খোলার স্বপ্ন ছিল তাঁর। রান্নার প্রতিও আগ্রহ ছিল তাঁর। কিন্তু ছেলের হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার খরচ বহন করার সামর্থ তাঁর নেই এ কথা কিছু দিন আগে জানিয়ে দেন স্নেহাংশু। তাঁকে অন্য কোনও কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য বলেন তাঁর বাবা। নিজের স্বপ্ন এই ভাবে ভেঙে যাওয়ায় বিষণ্ণ হয়ে পড়েন শুভ্রাংশু। এর পর বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তাঁর। এর পর শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান কাউকে না জানিয়ে। পরিবারের তরফে তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান চালালেও হদিশ মেলেনি। রবিবার ওই তরুণ তাঁর মাকে ফোন করে জানান, তিনি বাঘাযতীনে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে শান্তিতে আছেন। আর বাড়ি ফিরবেন না। তখন সামান্য কথা কাটাকাটিও হয়। ওই তরুণের বন্ধুদের দাবি, শনিবার রাতে তাঁদের বাড়িতে আসার পর থেকেই বিষণ্ণ অবস্থায় ছিল শুভ্রাংশু।
সোমবার বন্ধুর চার তলা বাড়ির ছাদ থেকে রাত পৌনে আটটা নাগাদ ঝাঁপ দেন বলে তাঁর বন্ধুরা জানিয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে গভীর রাতে সেখানেই মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ওই তরুণের পরিবারের তরফে কারোর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।