নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে, ‘শূন্য কলসির আওয়াজ বেশি’। বুধবারই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঘটা করে রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য যে সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ দেখতে চেয়েছে, তা সাধারণ মানুষকে দেখানো হবে।’ কিন্তু বৃহস্পতিবার রাজভবনের তরফে যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হল, তাতে সে দিন রাজভবনের অন্দরমহলে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না। উল্টে একাধিক প্রশ্ন উঠে গেল। প্রশ্ন উঠেছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখানোর কথা কী আসলে গিমিক? রাজভবনের ছোট-মাঝারি থেকে শুরু করে বড় কোনও আধিকারিক এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। শুধু মুচকি হেসে ইশারাপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম।’
গতকাল বুধবার রাজভবনের তরফে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকঢোল ঘোষণা করা হয়েছিল, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের দিন যে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে তা আমজনতাকে দেখানো হবে। মোট ১০০ জন রাজভবনে বসে ওই ফুটেজ দেখার সৌভাগ্য অর্জন করবেন। ঘটা করে সিসিটিভি প্রকাশ অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সচ কে সামনে’। সেই ‘সচ’ দেখার জন্য এদিন দুপুরে রাজভবনে হাজির হয়েছিলেন জনা তিরিশেক। যার সিংহভাগই সাংবাদিক। তাদের আবার অধিকাংশ ‘বিজেপির বংশবদ’ সংবাদমাধ্যমের। দুপুর ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ ফুটেজ প্রদর্শন শুরু হয়। ১ ঘণ্টা ৯ মিনিটের ফুটেজ দেখানো হয়। ঘটনার দিন ৫টা ৩২ মিনিট থেকে ৬টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত রাজভবনের উত্তর দিকের গেটের সামনে বসানো দু’টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হয়। ওই ফুটেজে অভিযোগকারিণী মহিলাকে রাজভবনের দিক থেকে পুলিশের আউটপোস্টের দিকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে যেতে দেখা যায়। তাও মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। ওই ‘সচ কে সামনে’র ফুটেজ দেখে হতাশ হন হাতেগোনা দর্শক থুড়ি সাংবাদিকরা। যদিও ‘সচ কে সামনে’ নামক অনুষ্ঠানে হাজির অতিথিদের আপ্যায়নে কার্পণ্য করেনি রাজভবন। জলযোগ করানো হয়েছে।
হেয়ার স্ট্রিট থানায় দায়ের করা অভিযোগে অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, রাজভবনের কনফারেন্স রুমে তাঁর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু এদিন রাজভবনের অন্দরমহলের কোনও সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ওই দিন প্রকৃত কী ঘটেছিল তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।
