এই মুহূর্তে




বিশ্বকাপ জয়ের আড়ালে চাপা কষ্ট, ঠাকুমার হার্ট অ্যাটাক, তবুও দেশের জন্য লড়েছেন আমনজ্যোৎ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যে ক্যাচটা না ধরলে হয়তো বিশ্বকাপ এবারেও জিততে পারত না ভারত। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা উইলবার্টকে আউট করার চাপ ছিল ভারতীয় কন্যাদের মাথার উপর। কেননা সেমি ফাইনালের পর ফাইনালেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন লরা। যাতে তিনিও অনন্য ছুঁয়েছেন। এর আগে পরপর দুটি ম্যাচে কোনও নারী ক্রিকেটার সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেনি। তা প্রোটিয়া সুন্দরী লরাকে আউট করার লক্ষ্যে এগিয়েছিলেন দীপ্তি শর্মা। তাঁর বলে লরার ব্যাট ছুঁতেই ৬ মারার সাহস দেখান তিনি। কিন্তু সেই বল ক্যাচ লুফে নেন আমনজ্যোৎ কৌর। কিন্তু ক্যাচ লুফেও হাত থেকে ছিটকে যাচ্ছিল তাঁর। কোন ভাবে নিজেকে সামলে বল মাটিতে পড়তে দেন নি তিনি। হ্যাঁ, এই ক্যাচই ভারতকে বিশ্বকাপে জিতেছে। রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকাও ফুল ফর্মে ছিল। কেননা তাঁদেরও বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ ছিল। বিশেষ করে, প্রোটিয়া দের দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান হলেন লরা উইলবার্ট।তাই তাঁকে আউট করা ছিল ভারতের কাছে সবথেকে বেশি চ্যালেঞ্জিং, সেটাই দায়িত্বের সঙ্গে পালন করেছেন আমনজ্যোৎ কৌর। ২৯৮ করে ভারতকে ২৯৯ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল ভারত। কিন্তু ২৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ২৪৬ রানেই অল আউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ৫২ রানে জিতে ইতিহাস গড়েন ভারতের মহিলা মহল। শেষ ক্যাচটা লোফেন ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। আর আমনজ্যোৎ-এর সেই ক্যাচেও ভিডিও এখন ভাইরাল। তাকে নিয়ে আনন্দ করছেন দেশবাসী। কিন্তু এত আনন্দের মধ্যেই চাপা কষ্ট লুকিয়ে ছিল আমনজ্যোৎ-এর। কেননা বিশ্বকাপ চলাকালীনই ক্রিকেট তারকার ঠাকুমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। যে খবরটি মেয়ের কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন আমনজ্যোৎ-এর বাবা।

 

নয়তো তাঁর মনোযোগ বিগড়ে যেত। মেয়েকে দেশের জন্যে লড়াই করতে দেখে ঠাকুমার হার্ট অ্যাটাকের খবরটি আমনজ্যোৎ এর থেকে আড়াল করেছিলেন তাঁর পরিবার। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের পরে এখন খবরটি প্রকাশ্যে এসেছে। এবং আমনজ্যোৎ-কে কুর্নিশ জানিয়েছেন ভক্তরা। কেননা চাপা কষ্ট নিয়েই তিনি দেশের জন্যে লড়েছেন। তাই ফাইনালে ভারতের জয়ে দীপ্তি শর্মা এবং শেফালি ভার্মার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তেমনি আমনজ্যোৎ কৌরের অবদানও ভোলা কঠিন হবে।কেননা গতকাল আমনজ্যোৎ-এর সুন্দর ক্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার আশা ভেঙে দিয়েছিল। সেই মুহূর্তেই ভারতের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ক্যাচটি নেওয়ার আগে, আমন দুবার বল ফেলেছিলেন, কিন্তু তৃতীয়বার, তার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। বিশ্বকাপের সময়, আমনজ্যোৎ-এর ঠাকুমা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে, তার পরিবার এই খবরটি তার কাছ থেকে গোপন রাখে যাতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত না। আমনের বাবা ভূপিন্দর সিংহ বলেছেন, “আমার মা, ভগবন্তী, আমনজ্যোৎ-কে প্রতিটি পদক্ষেপে সমর্থন করেছেন। আমি যখন আমার দোকানে থাকতাম, তখন তিনি পার্কে আমনজ্যোৎ-কে ছেলেদের সঙ্গে খেলা করতে নিয়ে যেতেন। তাই যখন আমার মা হার্ট অ্যাটাক হন, তখন আমরা আমনকে সেটা বলিনি। এখন, বিশ্বকাপ জয় আমাদের স্বস্তি এনে দিয়েছে।” শুরু থেকেই সামনের ঠাকুমা তার সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিলেন। মোহালির রাস্তা থেকে শুরু করে বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি তার নাতনিকে উৎসাহিত করেছেন। যখন হরমনপ্রীত কৌর নাদিন ডি ক্লার্ককে ক্যাচ দেন এবং ভারতীয় দল উদযাপনে ফেটে পড়ে, তখন আমন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আমনজ্যোৎ কৌর বলেন, “আমরা সবাই জানতাম যে ক্যাচটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ করে দিয়েছিল, এবং আমি খুব খুশি যে আমি এটি নিতে পেরেছি। আমি এটি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি। এখন, ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট একটি নতুন স্তরে পৌঁছেছে। আমরা প্রতিটি ফর্ম্যাটে বিশ্বকে আধিপত্য বিস্তার করব। আমি আমার দল, কোচ এবং পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে আমার ঠাকুমা, যিনি বর্তমানে অসুস্থ কিন্তু বাড়ি থেকে ম্যাচটি দেখছেন।”
আমনজ্যোৎ কৌরের যাত্রা কেবল একটি ক্রিকেটের গল্প নয়, এটি সাহস এবং নিষ্ঠার এক উদাহরণ। তিনি কঠিন পরিস্থিতিতেও তার দলের জন্য তার সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিলেন এবং সেই দুর্দান্ত ক্যাচের মাধ্যমে ভারতীয় মহিলা দলকে ২০২৫ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছিলেন।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

চন্দ্রকোণাতে ৬৯ হাজার টাকার খুচরো পয়সা দিয়ে নতুন স্কুটি কিনলেন চা বিক্রেতা, গুনতে সময় লাগলো ২ ঘণ্টা

গোল অ্যাসিস্টে রেকর্ড মেসির, এই প্রথম সেমিফাইনালে মায়ামি

এক রাতে ইউক্রেনে ৫০৩ বার হামলা চালাল রাশিয়া

শীতের শুরুতেই বাঘ মামার দর্শন, ডাঙায় দেখা মিলল কুমিরের

বিশ্বজয়ী রিচাকে ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসাবে দেখতে চান মমতা-সৌরভ

ধোনি-কোহলির সঙ্গে একই আসনে সূর্য, কী নজির গড়লেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক?

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ