নিজস্ব প্রতিনিধি: সোমবার থেকে সংসদে শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন। কার্যত সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। কিন্তু বাংলা জুড়ে ঢুঁ মারলে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যাবে। কার্যত কেন্দ্রের বাজেট নিয়ে এখানে কেউ বিন্দুমাত্র উৎসাহীও নয়। বরঞ্চ রাজ্য বাজেটের দিকে তাকিয়ে যাছেন বঙ্গবাসী। কারণ বিবিধ। বিগত ৮ বছরে মোদি সরকারের রাজত্বপাটের সময়ে বাংলার মানুষের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে তাঁরা আর নরেন্দ্র মোদির সরকারকে বিশ্বাস করতে চান না। সরকার বাজেটে কিছু ঘোষণা করলেও বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলনই আমজনতা দেখতে পান না। তা সে পেট্রোল-ডিজেলের দাম হোক কী রান্নার গ্যাসের দাম। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হোক কী নতুন সেতু, উড়ালপুল নির্মাণের কাজ। মোদি জমানায় বাংলা যে বঞ্চিতদের দলেই থেকে গিয়েছে ও যাবে সেটা এতদিনে বাংলার মানুষ বুঝে নিয়েছেন। আর সেই কারনেই তাঁরা আজ রাজ্যমুখী। আরও বলা ভাল মমতামুখী। কেননা হাজারো বাধা, আর্থিক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বাংলার উন্নয়ন চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যেভাবে নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ, উড়ালপুল নির্মাণ, মহিলাদের সরাসরি আর্থিক সুবিধা প্রদান, স্বাস্থ্যসাথীর মতো জনপ্রিয় প্রকল্প চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তা কুর্ণিশ জুটিয়ে নিচ্ছে বিশ্ববাসীরও। তাই কেন্দ্র বাজেট অপেক্ষা বাংলার মানুষ এখন অনেক বেশি তাকিয়ে আছে রাজ্য বাজেটের দিকে।
বাম জমানায় রাজ্য বাজেট সেভাবে আমজনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করত না। কেননা সেই বাজেটে আমজনতার সরাসরি লাভের কোনও গল্প থাকত না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সেই বাজেট গল্পটাই পুরো পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। একের পর এক সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা ও তার যথাযথ রূপায়ণ হওয়ার জেরে বঙ্গবাসীর বিশ্বাস অর্জনে পূর্ণ মাত্রায় সমর্থ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার। মোদির সরকার যে আস্থা অর্জন করতে পারেনি, মমতার সরকার সেই আস্থা অর্জনে সাফল্যের মুখ দেখেছে। আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে বাংলার আমজনতা কেন কেন্দ্র অপেক্ষা রাজ্য বাজেটের দিকে বেশি করে তাকিয়ে রয়েছেন। মোদির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ যে বাজেটই আগামিকাল সংসদে পেশ করুন না কেন, তার জেরে আমআদমি আদৌ কোনও লাভের মুখ দেখবেন কিনা সন্দেহ আছে। কিন্তু রাজ্য বাজেটে প্রায় সকলেই অনুমান করে নিচ্ছেন সেখানে আমজনতার হাতে সরাসরি আর্থিক সুবিধা তুলে দিতে বিন্দুমাত্র কুসুর করবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকা বাড়ানো হবে কিনা, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আরও মানুষকে রাজ্য সরকার জুড়তে পারল কিনা, পড়ুয়ারা আরও বেশি করে আর্থিক সুবিধা পাবে কিনা, কৃষকেরা আরও বাড়তি টাকা বিমার ক্ষেত্রে পাবেন কিনা এসবের দিকে রাজ্যের প্রতিটি মানুষ তাকিয়ে আছেন।