নিজস্ব প্রতিনিধি: বীরভূম(Birbhum) তথা বাংলার(Bengal) মুকুটে জুড়েত চলেছে আরও এক সাফল্যের পালক। কোভিডকালে স্কুল বন্ধ থাকায় বীরভূম জেলার নানাপ্রান্তে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যে ‘আনন্দপাঠ’ পাঠশালা(Anandapath Pathshala) চালু হয়েছিল, সেই ‘আনন্দপাঠ’ এই বছর ‘স্কচ’ পুরস্কারে(Skoch Award) সম্মানিত হতে চলেছে। খুব শীঘ্রই দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের হাতে এই সম্মান তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের(Rabindranath Tagore) শান্তিনিকেতনের(Shantiniketan) আদলে পাড়ার মাঝে এই পাঠশালাগুলি চালায় জেলা প্রশাসন। এই উদ্যোগই সমাদৃত হয়েছে জাতীয় স্তরে।
বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, ‘এই উদ্যোগ প্রথম থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশংসা পেয়েছে। রবীন্দ্রনাথ শিখিয়েছিলেন, কীভাবে গাছের নীচে, প্রকৃতির মাঝে প্রকৃতি থেকে শিক্ষা আহরণ করতে হয়। পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই কারণে সরকারি পঠনপাঠনের পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া এলাকায় স্কুল সময়ের বাইরে পাড়ার মধ্যে পড়ানো হচ্ছে। মানসিক, শারীরিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের লক্ষ্যে এই আনন্দপাঠ পাঠশালা এখন জেলাবাসীর অত্যন্ত কাছের। বীরভূমের পিছিয়ে পড়া প্রত্যেক বাচ্চাকে শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে আমাদের এই উদ্যোগ।’
কোভিডকালে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। সেই কথা ভেবে প্রাথমিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তফসিলি পড়ুয়াদের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে বীরভূম জেলার নানা প্রান্তে শুরু হয় ‘আনন্দপাঠ’ পাঠশালা। বীরভূমের ১৯টি ব্লকের মধ্যে ১২টি ব্লকের পিছিয়ে পড়া এলাকায় ক্লাস শুরু হয়। প্রায় ৬ হাজার পড়ুয়া এখানে নিয়মিত ক্লাস করে। কমিউনিটি শিক্ষকদের মাধ্যমে কখনও সকালের দিকে তো কখনও বিকেলের দিকে ‘আনন্দপাঠ’ পাঠশালার পঠনপাঠন চলে। লাভপুর, সাঁইথিয়া, নানুরে প্রথম ধাপে এই তিনটি ব্লকে ১০টি করে মোট ৩০টি পাঠশালা শুরু হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০ জন করে পড়ুয়ারা পড়াশোনা করতে থাকে। মোট ৪টি বেসরকারি সংস্থা এই পাঠশালা চালানোর দায়িত্বে রয়েছে। পরের ধাপে আরও ৯টি জায়গায় এটি শুরু হয়। পরে তা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। জেলাশাসক নিজে নিয়মিত পড়ুয়াদের ক্লাস নেন। পড়াশোনার অগ্রগতির খোঁজখবর নেন।