নিজস্ব প্রতিনিধি: ছিল ১১টা ৪৫। হয়ে গিয়েছে ৯টা ৪৫। ২ ঘন্টা এগিয়ে এসেছে সময়। আর তাতেই বিপাকে সুন্দরবনের(Sundarban) মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা(Madhyamik Candidates)। জলে জঙ্গলে, নদী-নালায় ঘেরা সুন্দরবনের গ্রামগঞ্জ থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়া যেমন সমস্যা তেমনি তার থেকেও বেশি সমস্যা সেখানে সময় মতন পৌঁছানো। আর তাই সুন্দরবনের যে সব পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্র(Exam Center) দূরে পড়েছে, তাদের ও অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কেননা তাঁদের পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রের নিকটবর্তী কোথাও বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকা সম্ভব নয়। দেখা যাচ্ছে, সুন্দরবনের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কারও সিট পড়েছে বাড়ি থেকে ৩০কিমি দূরে কারও বা ৪০ কিমি দূরে। এখন এরা এবং এদের অভিভাবকেরাই চিন্তিত পরীক্ষার দিনগুলিতে কীভাবে সময় মতন পরীক্ষাকেন্দ্র পৌঁছানো যাবে তা নিয়ে।
জানা যাচ্ছে, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামগুলির পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানো শুধুই সমস্যা বহুল নয়, সময় সাপেক্ষে ও ব্যয়বহুলও। বাড়ি থেকে অনেকটাই হেঁটে তাঁদের হয়তো আসতে হবে ভ্যানের স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে খেয়াঘাটে। তারপর নদী-খাল পেরিয়ে আবারও পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে হবে বাসের স্ট্যান্ডে। বাস থেকে নেমে হয়তো আবারও পায়ে হেঁটে বা অটো-টোটো ধরে যেতে হবে পরীক্ষাকেন্দ্রে। সকাল ৯টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে হলে বাড়ি থেকে ভোর ৫টার সময় হয়তো বার হতে হবে। আর তাই পরীক্ষার্থীরা ভোরবেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়েও পরীক্ষাকেন্দ্রে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অভিভাবকেরা। আবার অত ভোরে ভ্যান বা খেয়াঘাটের নৌকা মিলবে কিনা তা নিয়ে যেমন সন্দেহ থাকছে তেমনি বাস পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
যদিও স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাস, ভোর থেকেই ভ্যানের ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন খেয়াঘাটে সিভিল ডিফেন্স(Civil Defense) থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীরা থাকবেন। বাড়তি নৌকোর ব্যবস্থাও থাকবে পরীক্ষার্থীদের নদী পারাপারের সুবিধের জন্য। বিভিন্ন খেয়াঘাটে ও ভ্যান স্ট্যান্ডে বিশেষ নজরদারি থাকবে। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে যাতে কোনও সমস্যা যাতে না হয় সে জন্য সব ব্যবস্থা থাকবে। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে খেয়াঘাটগুলিতে নৌকা চলবে। কুয়াশা থাকলেও যাতে নদী পারাপার করানো যায়, তা দেখা হবে। অটো-টোটো-ভ্যানের চালকদের বলে দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষার্থী এলেই গাড়ি ছাড়তে হবে। যাত্রী ভর্তি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তবে এই আশ্বাসের পরেও খটকা থাকছে পরীক্ষার্থী থেকে অভিভাবকদের মধ্যে। যদিও তাঁরা জানেন, এই খটকা নিয়ে তাঁদের বেঁচে থাকতে হবে। পরীক্ষাও দিতে হবে।