নিজস্ব প্রতিনিধি: কয়লাপাচার(Coal Smuggling) কাণ্ডে এবার বাংলার শাসক শিবিরে থাবা বসাল ইডি(ED)। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার দিল্লিতে ইডি’র সদর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক(Malay Ghatak) ও পুরুলিয়া জেলার বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোকে(Sushanta Mahato)। দুইজনকেই আগামিকাল সকাল ১১টার সময় ডেকে পাঠানো হয়েছে। কয়লাকাণ্ডে এই নিয়ে চতুর্থবার তলব করা হল মলয়বাবুকে। কয়লা পাচারে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সামনে রেখেই তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে বুধবার রাতে সিবিআইয়ের(CBI) হাতে ইসিএলের(ECL) যে ৭জন আধিকারিক ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এদিন সকালে তাদের আসানসোল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তাদের তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কয়লাপাচার কাণ্ডে রাজ্যের সে সব হেভিওয়েটদের নাম উঠে এসেছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। এর আগেও তাঁকে ৩ বার ডেকে পাঠানো হয়েছিল এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। যদিও রাজ্যের শাসক শিবিরের দাবি, একুশের ভোটে হেরেও বিজেপির শিক্ষা হয়নি। আর তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রীদের হেনস্থা করার পথে হাঁটছে। কিন্তু এভাবে বাংলার ক্ষমতা দখল করতে পারবে না বিজেপি। তবে শাসক দলের তরফে যে ব্যাখাই দেওয়া হোক না কেন, শাসক শিবিরের একের পর এক নেতা, বিধায়কেরা ইডি’র ডাক পাওয়ায় এখন কিছুটা হলেও শোরগোল পড়েছে বাংলার রাজনীতিতে। আর সেই শোরগোলের মধ্যে নতুন ভেসে ওঠা নাম অবশ্যই বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো। সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লা পাচারে তিনি সাহায্য করছেন বলে জানতে পেরেছে ইডি। সেই সূত্রেই তাঁকে তলব করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার কলকাতার নিজাম প্যালেসে ইসিএলের যে ৭জন কর্মী তথা আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই ৭জন হলেন ইসিএলের বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এস সি মৈত্র, প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার তন্ময় দাস, ম্যানেজার মুকেশ কুমার এবং দেবাশিস মুখোপাধ্যায় ও রিঙ্কু বেহারা নামে ২ কর্মী। এঁদের সঙ্গে সরাসরি কয়লা মাফিয়াদের যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ। এদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এদিন সকালে তাদের কলকাতা থেকে সড়কপথে আসানসোলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আসানসোলে নিয়ে যাওয়ার আগে এদের সকলের মেডিকেল চেকআপ করা হয়। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, মোটা টাকার বিনিময়ে কয়লা মাফিয়াদের কয়লা পাচার করার দরজা খুলে দিয়েছিলেন এই আধিকারিক ও কর্মীরা। ইসিএলের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার তন্ময় দাস ও কর্মী দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর দায়ের হয়েছিল। ওই ৭ জনের বাড়ি ও অফিসে ইতিমধ্যে তল্লাশিও চালিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকেই প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দেবাশিস মুখোপাধ্যায় ও রিঙ্কু বেহেরা আদতে নিরাপত্তারক্ষী।