নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতায় বাঙালি জওয়ান বাপ্পাদিত্য খুটিয়ার দেহ আসার পর তাঁকে বন্দ্র চত্ত্বরে দেওয়া হয়েছিল গার্ড অব অনার। তারপর শবদেহবাহী গাড়ি রওনা দিয়েছিল হত জওয়ানের বাড়ি খড়গপুরের উদ্দেশ্যে। খড়গপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বারবেটিয়ায় বাড়ি বাপ্পাদিত্যের। ৩২ বছরের হাসিখুশি বাপ্পাদিত্যের দেহ এলাকায় আসার আগেই এলাকা জুড়ে ছিল জনসমাগম। শোকস্তব্ধ সকলেই। তাঁর দেহ বাড়ি নিয়ে এসে সেখানেই জানানো হয় শেষ শ্রদ্ধা।
কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে এনে সেখানেই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। গান স্যালুট (Gun Salute) দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় বাপ্পাদিত্যের উদ্দেশ্যে। গান স্যালুটে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকেও। ফুলে ছেয়ে যায় পথ। অন্তিম শ্রদ্ধা জানায় উপস্থিত সকলেই। বাড়িতে ওঠে কান্নার রোল। এলাকা শোকস্তব্ধ। খড়গপুরেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে তাঁর।
গত শুক্রবার লাদাখ যাওয়ার পথে ধস নামায় উল্টে গিয়েছিল সেনা জওয়ানদের একটি বাস। তুরতুক সেক্টরের শিয়ক নদীতে বাস পড়ার মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন (Death) ৭ জওয়ান। তাঁদের মধ্যে ১ জওয়ান (Army) খড়গপুরের বাপ্পাদিত্য খুটিয়া (৩২)।
বাপ্পাদিত্য গত ২০০৯ সালে যোগ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে। ২৭ এপ্রিল বাড়ি এসেছিলেন তিনি। ১ মাস ছুটি কাটিয়েছিলেন। তারপর ফের রওনা দিয়েছিলেন কর্মস্থলে। গুজরাট গিয়েছিলেন তিনি। তারপর পোস্টিং হয়েছিল সিয়াচেনে। এরপর সেনা বাসে করে লাদাখের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন বাপ্পাদিত্য। সেই সময় পাহাড়ে ধস নামে। আর তার জেরেই নদীতে পড়ে যায় বাসটি। ঘটনায় প্রাণ হারান ৭ জওয়ান। গুরুতর জখম আরও ১৯ জন। ওই সেনা বাসে মোট ২৬ জওয়ান ছিলেন।
আহত জওয়ানদের দ্রুত উদ্ধার করে পর্তারপুরে ফিল্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হেলিকপ্টারে করে তাদের চান্ডিমন্দির কম্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, আহত জওয়ানদের সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকেরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বাপ্পাদিত্য খুটিয়া।
নিহত জওয়ানের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী ও ১১ মাসের শিশুকন্যা। বাপ্পার বাবা অবসরপ্রাপ্ত আরপিএফ সুকুমার খুটিয়া। তিনি বলেন, দুর্গম সিয়াচেনে পোস্টিং নিতে বারণ করা হয়েছিল। ছেলে চেয়েছিল দেশের জন্য ভয়কে জয় করতে।