নিজস্ব প্রতিনিধি,গঙ্গাসাগর : কুম্ভ মেলা না থাকার কারণে গঙ্গাসাগর মেলাতে উপচে পড়বে ভিড় এমনটাই আশঙ্কা করেছিল জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা যেন সত্যি হলো শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই । গঙ্গাসাগরের সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়েছে মানুষের ঢল। মোক্ষ্য লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ ভিড় জমিয়েছে সাগর পাড়ে। শনিবার থেকেই শুরু হচ্ছে মকর সংক্রান্তির স্নান। ইতিমধ্যেই ত্রিস্তরি ও নিরাপত্তা বলয় মুড়ে ফেলা হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর (Gangasagar)সমুদ্র সৈকত। শুক্রবার সন্ধ্যায় গঙ্গাসাগরে এসে পৌছান পুলক রায় ,মন্ত্রী ,জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী বিভাগের। এছাড়াও উপস্থিত হন রাজ্যের পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।
একইসঙ্গে সাগরে আসেন, সুজিত বোস, মন্ত্রী,অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরী পরিষেবা বিষয়ক। শুক্রবার সন্ধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ।এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাশাসক(DM) সুমিত গুপ্তা।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জি। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস(Minister Arup Biswas) জানান,এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নতুন আকর্ষণ’বাংলার মন্দির’ ।বাংলার বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্র যেমন কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, তারাপীঠ, তারকেশ্বর, অহনা কালী মন্দিরে অবিকল প্রতিরূপ এবার দেখা যাচ্ছে মেলা প্রাঙ্গনে। মেলার পবিত্র পরিবেশে পুণ্যার্থীরা পাবেন এই সকল তীর্থ দর্শনের সুযোগ। একটি ভ্রাম্যমান এল ই ডি বোর্ডতে দেখান হচ্ছে ৩ টি মহাতীর্থের লাইভ পূজা ও দর্শন ।যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ সাগর মেলা প্রাঙ্গন থেকে তাদেখার সুযোগ পাবেন।
মহাসাগরে আরতি সাগরের পুণ্যতটে এবার তিনদিনব্যাপী মহা সাগর আরতির আয়োজন করা হয়েছে। ১২ই জানুয়ারি সাগর সঙ্গমে ডাকেন যোগে, শব্দের পবিত্র ধনিতে এবং পুরোহিতদের পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে এই মহাসাগর আরতির শুভ সূচনা হয়েছে। এই অপরূপ দৃশ্য ওয়োর টেলিকাস্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে দেশে-বিদেশে। পুণ্যার্থীরা গত ১২ ই জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মহা সাগর আরতি দর্শনের সুযোগ লাভ করেছেন । যা আগামী ১৪ই জানুয়ারি পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।আজও সন্ধ্যা ৬ টায় মহাসাগর আরতি অনুষ্ঠিত হয়।এখনও পর্যন্ত ২,৩৪,৩৫০ জন পুণ্যার্থী এই শংসাপত্র দেখেছেন। অনেকগুলি বিষন্ত এই উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে। এই দর্শনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ গঙ্গাসাগর মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। ই স্নান করেছে ১,৮৩৪ জন পুণ্যার্থী। এ বছর গঙ্গাসাগর মেলাকে পরিবেশ বান্ধব গঙ্গাসাগর মেলা গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকট রাজ্য সরকার। রাজ্যের মা মাটি মানুষের সরকার আসার পর গঙ্গাসাগর মেলায় আমল পরিবর্তন ঘটেছে। গঙ্গাসাগর মেলাতে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) সদাচিন্তিত। গঙ্গাসাগরে আগত পুণ্যার্থীদের সকল রকমের সুবিধা দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ গঙ্গাসাগরে এসে পূর্ণ স্নান করে পুনরায় বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আগামীকাল এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দিতে প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।