নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরে মার্চ মাস শেষে এপ্রিলের পনেরোদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও গোটা দক্ষিণবঙ্গে একদম বৃষ্টি হয়নি বললেই চলে। আর তাতেই চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কৃষি দফতরের আধিকারিকদের। বোরো ধান এবং বিভিন্ন ধরনের রবি ফসলের চাষে প্রয়োজনীয় জলের বেশিরভাগটাই মেটানো হয় ভূগর্ভস্থ জল থেকে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভের জলস্তর নেমে গেলে চাষের কাজে সেচের সমস্যা তৈরি হবে বলে মনে করছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকরা।
কৃষি দফতরের কর্তাদের আশঙ্কা কয়েকদিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে ভালো পরিমাণ বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে চলতি বছরে যেহেতু শীতকালে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বেশ কিছুটা বেশি বৃষ্টি হয়েছে তাই পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকবে। বছরের প্রথম দিকে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কিছুটা বেড়েছিল। দক্ষিণবঙ্গ ওই বৃষ্টি না পেলে আরও সমস্যা হতো বলে মত কৃষি দফতরের মুখ্য আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাসের।
মার্চ-এপ্রিলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি না হওয়ায় রবি চাষ ও বোরো চাষের পাশাপাশি সেচের জলে সঙ্কট দেখা দিয়েছে পাট চাষেও। রাজ্যে মার্চ-এপ্রিল মাসে পাট চাষ শুরু হয়। আর এই চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলের পুরোটাই মেটে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টি থেকে। দক্ষিণবঙ্গে মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনায় বেশি সোনালি তন্তু পাটের চাষ হয়। কৃষি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই তিন জেলার মধ্যে একমাত্র মুর্শিদাবাদে মার্চ মাসে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। যার পরিমাণ ০.৭ মিমি। মার্চে আর কোনও জেলায় একফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি। এমনকি এপ্রিল মাসের অর্ধেক দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলাতেই বৃষ্টির দেখা নেই। সাধারণত মার্চ মাসে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকে ২০ থেকে ৩০ মিমি-র মধ্যে। এপ্রিল মাসেও স্বাভাবিক বৃষ্টির পরিমাণ থাকে ৬ থেকে ১৮ মিমি-র মধ্যে। কিন্তু মার্চ-এপ্রিল মাসে এমন বৃষ্টিহীন অবস্থা সাম্প্রতিক কালে হয়নি বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।