নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘INDIA আমিই তৈরি করেছিলাম। নামটাও আমারই দেওয়া। ভোটের পরে আমি ওটা বুঝে নেব। এখানে আমি শুধু বলতে এসেছি, কেন তৃণমূলকে(TMC) আপনারা ভোট দেবেন, আর কেন বিজেপিকে(BJP) দেবেন না। কেন সিপিএম-কংগ্রেসকে দেবেন না, কেন তৃণমূলকেই দেবেন। আমি শুনেছি, ওরা বলে বেড়াচ্ছে এখানে ওরা নাকি INDIA অ্যাল্যায়েন্সের হয়ে লড়ছে। আরে এখানে তো কোনও জোটই হয়নি। আমরা এখানে একাই লড়ছি। মনে রাখবেন, এখানে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। আর একটা সংখ্যালঘু কী দল হয়েছে, মনে রাখবেন ওদেরও ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকেই ভোট দেওয়া। যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তাহলে একলা চলো রে। আমরা তাই বাংলায় একাই লড়ছি।’ রবি দুপুরে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে ধুবুলিয়াতে(Dhubulia) সভা করতে এসে এভাবেই জনতাকে উদ্দেশ্য করে বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে যে ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে সেই তেহট্ট, পলাশিপাড়া, কালিগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, চাপড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর এবং কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একুশের ভোটে তৃণমূল কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র ছাড়া সবকটিতেই জয়ী হয়। আবার উনিশের ভোটে এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে মহুয়া জিতেছিলেন ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে। সেই হিসাবে দেখলে কৃষ্ণনগর মহুয়া বা তৃণমূল দুইয়ের জন্যই বেশ নিরাপদ। তারপরও মমতা এই কেন্দ্রকেই বেছে নিয়েছেন ২৪’র ভোট যুদ্ধে তাঁর রাজনৈতিক প্রচার শুরু করার জন্য। কেন কৃষ্ণনগরকেই বাছলেন মমতা? ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, অনেক হিসাব করেই মমতা কৃষ্ণনগরকে বেছে নিয়েছেন। এক, বিজেপির চক্ষুশূল মহুয়াকে জেতানোর বার্তা দিয়ে গেরুয়া শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া। দুই, এই লোকসভা কেন্দ্রে বাম আর কংগ্রেস দুই দলের ভোটই রয়েছে যা উনিশে আর একুশের ভোটে বিজেপির দিকে গিয়েছিল। সেটাও ঠেকাতে চান মমতা। তিন, এই লোকসভা কেন্দ্রে রয়েছে মতুয়া আর সংখ্যালঘু মানুষ যারা CAA নিয়ে উদ্বিগ্ন। চার, এই কেন্দ্রে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা যারা ভিন রাজ্যে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই সব নিয়ে বার্তা দিতেই মমতা বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণনগরকেই।
এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘বিজেপি একটা দাঙ্গাবাজ দল, তাদের সঙ্গ দিচ্ছে কংগ্রেস-সিপিএম। বাংলায় আমরা একা লড়ছি, আমরা একাই বিজেপিকে হারাতে সক্ষম। সিপিএম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানেই বিজেপিকে ভোট দেওয়া। বাংলায় আমরা একা চলছি, একাই চলব। ‘দেশে একজোট হয়ে লড়াই করো, কিন্তু বাংলায় সে কথা ভেবো না। বাংলায় সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি আমাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া, কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া, আর একটা লেজুড় মুসলিম পার্টি হয়েছে। এখানে তো জোট নয়, ঘোট হয়েছে। তৃণমূল এক দিকে অন্যদিকে, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়ে লড়ছে। আর এক দিকে আমরা একা লড়ছি। বিজেপি একটা দাঙ্গাবাজ দল। তাঁদের সঙ্গ দিচ্ছে কংগ্রেস এবং সিপিএম। নিজের সর্বনাশ নিজে না করতে চাইলে ওদের ভোট দেবে না।’