নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়ম করে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি প্রতিটি সভা থেকে নিশানা বানান। নিশানা বানান তাঁর দল বিজেপিকেও। সোমবার উত্তরবঙ্গের(North Bengal) রায়গঞ্জ লোকসভা(Raiganj Constituency) আসনের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর সমর্থনে উত্তর দিনাজপুরে দুটি সভা করতে এসেও তিনি নিশানা বানালেন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) ও বিজেপিকে(BJP)। সেই সঙ্গে বললেন, ‘সকালে উঠলে ওনার ছবি। চান করতে গেলে দেখবেন ওখানে ছবি। ঘুমোতে গেলে দেখবেন ওনার ছবি। উনি দেশের প্রধানমন্ত্রী না, প্রচারমন্ত্রী। উনি ভুলে গিয়েছেন উনি প্রধানমন্ত্রী, ওনার মনে হচ্ছে উনি প্রচারমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন। প্রত্যেক দিন কাগজে মিথ্যা কথা বলছে। আমাকেই সহ্য করতে পারে না, ওনার নাকি এখন মহিলা ভোট চাই! তৃণমূলকে(TMC) হারানোর ক্ষমতা বিজেপির নেই। কারণ, মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের সরানোর ক্ষমতা নেই তোমাদের।’ নজরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)।
এদিন মোদিকে নিশানা বানিয়ে মমতা বলেন, ‘বলেছিল, ১৫ লক্ষ টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেবে। দিয়েছে? দেশটাকে গণতন্ত্রের জেলখানা করে দিয়েছে। দূরদর্শ থেকে স্টেশনের রং গেরুয়া করে দিয়েছে। সাধু-সন্ন্যাসীদের অপমান করেছে। বিজেপি ইতিহাস-ভূগোল ভুলিয়ে দিয়েছে। কেন দেশে বেকার বেড়েছে? কেন ওষুধের দাম বেড়েছে? কেন এনআরসি, সিএএ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হয়েছে? সন্দেশখালির মহিলারা খারাপ রয়েছে বলে কেঁদে বেড়াচ্ছেন। মোদীবাবুর চোখে কান্না। কুমীরের অশ্রু। ওঁকে জিজ্ঞেস করি, গুজরাতের নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন খুন হয়েছেন। হাথরসের ঘটনা হয়েছে। কী করেছ? কুস্তিগির সাক্ষীকে বিজেপির নেতা অপমান করেছে। সেই নিয়ে কী করেছ? সন্দেশখালির ঘটনা তোমাদের পরিকল্পিত রচনা। এনআরসি নিয়ে দিল্লিতে ক’জন মারা গিয়েছেন, জানেন? নালা লাল হয়ে গিয়েছে। কেউ জানে না, কত লোক মারা গিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশেও মারা গিয়েছে। আমাকে বলছে কৈফিয়ত দাও। বাংলার ভোট হলে জবাব আমি দিতাম। বিজেপিকে জবাব দিতে হবে। কারণ, নির্বাচনটা দিল্লির। একটা কোটিপতির ভোটের দাম যা, একটা বিড়ি শ্রমিকের ভোটেরও তাই দাম। সবাই ভোটটা দিন। সরকার বদলে দিন। ‘বিজেপিকে হারাতে হবে তো!
এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আমরা যা বলি, তা করি। বিজেপি যা বলে, করে না। ওরা রামকৃষ্ণকে মানে না। বিশ্বাস করে না। তিনি সর্বধর্মসমন্বয় শিখিয়েছেন। ওরা বিবেকানন্দের হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস মানে না। বাইরে থেকে নিয়ে আসা, পচা শামুকে পা কাটা কিছু জনের কথা মানে, সেই রকম ধর্ম মানে। বলে মমতাদিদি দুর্গাপুজো করতে দেন না। সেই পুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। সব মানুষ একসঙ্গে করে। আগামী দিনে মোদি এলে কোনও ধর্ম থাকবে না। যা পেয়েছিল আগের বার, সর্বোচ্চ পেয়েছিল। এ বার পাবে না। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে অর্ধেক চলে যাবে। তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা পাবে না। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশরা লড়াই করছে। আমাদেরও এক জন রয়েছে ওঁর সঙ্গে। বাংলায় পাবে না। কোথা থেকে পাবে ৪০০ আসন! নিজেকে বিশ্বাস করুন। সার্ভে বিশ্বাস করবেন না। আমাদেরও ২০১৬ সালে হারিয়ে দিয়েছিল। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি বিজেপি। মা-বোনদের সাম্মানিক দিল না। আজ বলছে, তিন মাস পর লক্ষ্মীর ভান্ডার তুলে দেব। এত বড় সাহস? আমার ইচ্ছা হলে অন্য ভাষায় আক্রমণ করতাম। তোমাদের মতো নই। তাকালে মনে হয় কেউটে সাপের আগুন বার হচ্ছে। এমন দল তোমরা। সারা দিন গালাগালি দাও। বাবুরা এখন মিছিলে লোক পাচ্ছে না, আপনাদের ডাকছে। টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। কারণ, ওটা চুরির টাকা, পাপের টাকা। আমি মনে করি, নেওয়া উচিত না। কিন্তু আপনার মনে হলে টাকাটা নিন। কিন্তু ভোটের দিন ওদের গেঁথে দিন। মানে ভোটটা তৃণমূলে দিন।’