নিজস্ব প্রতিনিধি: নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (SUVENDU ADHIKARY) তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM) তথা তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE)। হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘সব বেরোবে’। বিরোধী দলনেতার ক’টা বাড়ি-গাড়ি-পেট্রোল পাম্প রয়েছে, সব তিনি জানেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিন একেবারে আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেহালার মঞ্চ থেকে তাঁর একদা সহকর্মীর প্রতি প্রশ্ন, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, মালদা সহ বিভিন্ন জেলায় চাকরি আসলে কে দিয়েছে? কার কটা বাড়ি, কটা গাড়ি, কয়টা পেট্রোল পাম্প তিনি জানেন। সবকিছুর তদন্ত হবে। এদিন শুভেন্দুর নাম না করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এক গদ্দার- মীরজাফর হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে ৫০ জন- ১০০ জন- এত জনের নাম দিয়ে এসেছে বলে। অথচ সেই গাদ্দাররা একদিন ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের আশ্রয়ে। সেই গদ্দার হুমকি দিচ্ছে, কবে কেন্দ্রের এজেন্সি কাকে গ্রেফতার করবে। অথচ নিয়োগ দুর্নীতির মূল কান্ডারী সে নিজেই। বিজেপিকে ও সেই ‘গদ্দার’কে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘এত বাড় বেড়ো না। ঝড়ে ঝরে পড়ে যাবে। তৃণমূল ঠিক লড়ে যাবে’। তৃণমূল সুপ্রিমো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি ও তাঁর দলের সকলে বাঁচতে হলে লড়াই করে বাঁচার মত করে বাঁচবেন। কাপুরুষের মত বাঁচবেন না।
এদিন তিনি বলেন, রাজ্যের ৮ অফিসারকে শুধু শুধু ডেকে পাঠানো হচ্ছে দিল্লি। তারপরেই তাঁর প্রশ্ন, কয়লা কার অধীনে? কোল ইন্ডিয়া কার অধীনে? সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব কার? কড়া সুরে তিনি বলেন, ‘তোমরা দায়িত্ব পালন করনি’। এদিন কেষ্টর (ANUBRATA MONDAL) পাশে থাকার বার্তাও দেন তিনি। বলেন, এক কেষ্টকে জেলে পুরলে লক্ষ কেষ্ট তৈরি হবে। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেষ্ট কী করেছিল?’ আর এই বলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির (CBI) (ED) নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তলেন তিনি।
তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশ্ন, প্রতিহিংসার রাজনীতি করে আর কাকে কাকে জেলে পুরতে চাইছে বিজেপি (BJP)? প্রশ্ন, ববি (FIRHAD HAKIM) কে? অভিষেক (ABHISHEK BANERJEE) কে? বলেন, সকলে মিলে জেল ভরো আন্দোলন শুরু করবেন। সেই হুঁশিয়ারি দিয়েই বলেন, ঐতিহাসিক ২১ জুলাই ১০০ জন আহত হলেও তৃণমূলকে দমানো যায়নি। এবারেও যাবে না। ’নাগরিকের অধিকার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন ‘আমরা সকলে নাগরিক’। এভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। তারপরেই তিনি বলেন, জেলবন্দি যে সেই বিষয় বিচারাধীন। তাঁকে (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না তিনি। বলেন, অন্যায় করলে অ্যাকশন হোক। কিন্তু তারপরেই তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিরপেক্ষতা নিয়ে। অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইডি এবং সিবিআইকে ব্যবহার করছে বিজেপি ও বিজেপি শাসিত কেন্দ্র। বিজেপি বিরোধী দল ও রাজ্যগুলির কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার প্রশ্ন মাঝ রাতে কেন হানা দেওয়া? অথচ বিজেপিতে নাম লেখালে কেউ অপরাধ করেও কী করে পার পেয়ে যায়?
এদিন তিনি আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ‘খেলা হবে দিবস’- এর কথাও ঘোষণা করেন। বলেন, রাস্তায় রাস্তায় নেমে হবে মিটিং-মিছিল- প্রতিবাদ- প্রতিরোধ। চলবে আন্দোলন। দলের নেতা- কর্মী ও সমর্থকদের রাস্তায় নামতে বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর নির্দেশ, কাজের দিন সন্ধ্যা থেকে এবং ছুটির দিন বেলা তিনটে থেকে লাগাতার কর্মসূচি চালানোর। বলেন, রাস্তাই পথ দেখাবে নতুন রাস্তার।