নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথম থেকেই সভার সুর উচ্চগ্রামে বেঁধে রেখেছিলেন তিনি। নিজে থেকেই সরব হচ্ছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাজকর্ম নিয়ে। শেষের দিকে সেই অভিযোগেই তিনি বিঁধলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপারকেও। অনেকেই সেই ঘটনাকে প্রকাশ্যে ভর্ত্সনা বলে চিহ্নিত করছেন, আবার অনেকে এটাও বলেছেন নির্দিষ্ট কিছু ঘটনা ও খবরের ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন পুলিশ সুপারকে কিছু উপদেশ দিয়েছেন মাত্র। তিনি যাতে নিজের জেলায় ঠিক ভাবে কাজ করেন ও করতে পারেন সেই জন্য তার পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন। নজরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে। ভুললে চলবে না এই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা একসময় অধিকারীদের গড় হিসাবেই পরিচিত ছিল। একুশের ভোটে বিজেপির হার ও দলবদলের জেরে নিজ জেলাতেই এখন চূড়ান্ত কোনঠাসা দশায় রয়েছে অধিকারীরা।
কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এদিন বসেছিল রাজ্যের উচ্চপ্রশাসনিক বৈঠক। সেই বৈঠকের মধ্যমণি ছিলেন অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসকেরা, পুলিশ সুপাররা, আইসি, ওসিরা। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী থেকে সচিবেরাও। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-র দিকে। বললেন, ‘কোথায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার? লুকিয়ে আছে?’ মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে আসন থেকে উঠে দাঁড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন তাঁর দিকে। বললেন, ‘তোমার জেলা সম্পর্কে বেশ কিছু অভিযোগ পাচ্ছি। কাউকে কাউকে সাজিয়ে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, অভিযোগ আসছে। অনেক দিন ধরে দেখছি। অনেক দিন বলেছি, কিছু করা হয়নি। তুমি কি ওখানে কাজ করতে ভয় পাচ্ছো? তোমাকে কি রাজ্যপাল ফোন করছেন? এটা কোরোনা, ওটা কোরোনা, এসব নির্দেশ দিচ্ছেন রাজ্যপাল? তোমাকে ফোন করলেও তুমি বলবে না জানি। তবে ভয় পেও না। তোমাকে অনেক আশা নিয়ে ওখানে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমি হলদিয়া নিয়েও কমপ্লেন পেলাম। দুইজন গ্রেফতার হল। কিন্তু তোমরা থাকতে আমাকে কেন মাথা ঘামাতে হবে? কারও কথা না শুনে কাজ করতে হবে। ভয় পাওয়ার দরকার নেই। মনে রাখতে হবে জেলার পুলিশ সুপার রাজ্য সরকারের অফিসার। আর যদি তোমার ওখানে কাজ করতে ভয় লাগে পলিটিক্যালি প্রেশারের কারনে তাহলে আমাকে সেটা জানিও।’