নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি চিকিৎসক (Doctor) গৌরব রায়। আক্রান্ত, ঘড়ছাড়া। রোগীর পরিবারের রোষের শিকার হয়েছিলেন চিকিৎসায় নিজেকে উজাড় করে দেওয়া এই ডাক্তার। আর তাঁকে ঘরে ফেরালেন চির কৃতজ্ঞ রোগী ও তাঁদের পরিবারই। উদ্যোগ নিয়েছিল চিকিৎসক সংগঠন। এরকম ঘটনা ঘটলে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে ভাবতে হবে, চিকিৎসক মহলে শোনা গিয়েছে এমনি অসন্তোষ।
অতিমারি পরিস্থিতিতে নিয়মিত রোগীর সেবা করে গিয়েছেন ডাঃ গৌরব রায়। আর সেই তিনিই কি না ঘরছাড়া! তৎপর হয়ে ছুটে এলেন রোগী ও তাঁদের পরিবার। ডাক্তার নিগ্রহ রুখতে এই উদ্যোগ নিয়েছিল জয়েন্ট প্লাটফর্ম অব ডক্টরস। জানা গিয়েছে, নিমতা বাজারের বাসিন্দা পাপ্পু কুণ্ডু (২৫)। তাঁর বুকে ব্যথা হলে বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয় ডাঃ গৌরবকে। তিনি আসতে পারেননি। এদিকে রোগীর পরিবার হাসপাতালেও নিয়ে যাননি তাঁকে। পরে মৃত্যু হয় ওই রোগীর। এরপরেই রোগীর পরিবার ও কিছু লোক ছুটে যান ডাক্তারের বাড়িতে। অভিযোগ, মারধর করা হয় চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যদের। সেই সময় চিকিৎসক আত্মগোপন করেন তাঁর পরিচিত এক চিকিৎসক বন্ধুর বাড়িতে। ১৪ এপ্রিলের এই ঘটনা থেকেই ঘরছাড়া ছিলেন তিনি।
এরপর উদ্যোগ নেয় জয়েন্ট প্লাটফর্ম অব ডক্টরস। এগিয়ে আসেন অসংখ্য রোগী ও তাঁদের পরিবার। এঁরাই উপকৃত হয়েছিলেন ডাঃ গৌরবের চিকিৎসায়। সুরক্ষা বলয় দিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় ডাক্তারকে। এরপর নিমতা থানায় তাণ্ডবকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা তাণ্ডব চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে ছবি জমা দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ডাক্তারের বিরুদ্ধে রোগী গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে কিন্তু রোগীর চিকিৎসা ওইদিন ডাঃ গৌরব করেননি। প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাহলে কেন অভিযোগ? বলা হয়েছে, সবসময় রোগীর পরিবারের লোক ডাকলেই বাকি রোগীদেরও গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা ছেড়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এরপরেই প্রশ্ন তোলা হয়, হাসপাতালের (Hospital) এমার্জেন্সি বিভাগে কেন নিয়ে আসা হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। চিকিৎসকরা এও বলেন, এই রকম হলে ডাক্তাররা পরিষেবা দিতে ভয় পাবে। ডাঃ গৌরবের কাছে সেরে ওঠা রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরাও চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় অসন্তুষ্ট।