নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের জেলা সংগঠনে বড় ঝাঁকুনি দিয়েছে বাংলার(Bengal) শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। লোকসভা নির্বাচনের আগে লড়াইয়ের মাঠ বুঝে নিতে এখন থেকেই পদক্ষেপ শুরু করেছে তাঁরা। তাই দলের সংগঠনের বেশ কিছু জেলা সভাপতিকে বদলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আনা হয়েছে নতুন মুখদের যারা বয়সের দিক থেকেও নবীন। সেই নতুন মুখদের মধ্যে আছেন পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ পাওয়া তৃণমূল নেতা পীষূষকান্তি পণ্ডাও(Pijushkanti Panda)। সোমবারই সেই পদ দেওয়া হয়েছে পীষূষকান্তিকে, আর মঙ্গলবার দলেরই বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি শুধু এই পদপ্রাপ্তির জন্য কেঁদেই ভাসালেন না, মঞ্চ থেকে নেমে দলের কর্মীদের নতমস্তকে প্রণামও জানালেন। সেই ঘটনার ভিডিও এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতার ভাবমূর্তি একদিকে যখন উজ্জ্বল হয়েছে তেমনি মুখ পুড়ছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর-১ ব্লকের অমর্ষি ৭/১ অঞ্চল তৃনমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল অমর্ষি বৃন্দাবনচদ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। এখানেই শতাধিক তৃণমূলের কর্মীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে উপস্থিত ছিলেন জেলা থেকে ব্লকের নেতৃত্ব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পীযূষকান্তি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপূর্ণ ভাবে চোখের জলে ভেসে যান পীযূষকান্তি। ভাষন শুরু আগেই কার্যত কেঁদে ফেলেন তিনি। এরপরেই শতাধিক তৃণমূলের কর্মীর সামনে নতজানু হয়ে প্রণাম করেন তিনি। সামনে উপস্থিত থাকা তৃণমূল কর্মীরা এতে খানিক হকচকিয়ে যান। তারপরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কর্মীদের জন্যই আজকের এই দিনটা এসেছে। তাই আমি তাঁদের নত মস্তকে প্রণাম করতে চাই… মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জেলায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাঁরা কাঁথির দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় যে ৭ বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে বিজেপির কোনও ক্ষমতা নেই। বিরোধী দলনেতার বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে কোনও লাভ নেই। আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই জেলায় দল খুব ভালো ফল করবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মানুষ রয়েছেন।’
পীযূষকান্তির ওই নতমস্তকে প্রণামের ঘটনায় এখন রীতিমত উজ্জিবিত জোড়াফুলের কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘অনেক নেতাই কর্মীদের পাত্তা দেয় না। কিন্তু নতুন সভাপতি নতমস্তকে প্রমাণ জানিয়ে আমাদের এই ভাবে সম্মান দিলেন। এটা খুবই ভালো লেগেছে। ওঁর নেতৃত্বে এই জেলায় আমাদের দল আরও শক্তিশালী হবে বলেই মনে করি। লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল হবে।’ জোড়াফুল শিবিরে যখন এই খুশির হাওয়া তখন পীযূষকান্তির ঘটনা মুখ পোড়াচ্ছে বিজেপির। কেননা পদ্মশিবিরের কোনও নেতাই দলের কর্মীদের এভাবে সম্মান জানান না। সব থেকে বড় কথা দলের নেতৃত্বের দুর্ব্যবহারে পদ্মের কর্মীরা হয় বসে যাচ্ছেন, নাহয় দল ছাড়ছেন, কিংবা দলেরই অনুষ্ঠান থেকে কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পীযূষকান্তির মতো কোনও বিজেপি নেতা দলের কর্মীদের এভাবে সম্মান দেবেন সেটা এখন কোনও বিজেপি কর্মী ভাবতেও পারছেন না।