নিজস্ব প্রতিনিধি: দিল্লিতে(New Delhi) তৃণমূলের(TMC) যে ধর্না কর্মসূচী এদিন থেকে শুরু হয়েছে সেই ধর্না কর্মসূচীর অন্যতম দাবিই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা(PMGAY) প্রকল্পে বাংলার বকেয়া টাকা আদায়। কেন্দ্র সরকার এই প্রকল্পের টাকা বাংলায়(Bengal) পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ায় এ রাজ্যের প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তা(Consumers) এখন চরম বিপাকে পড়েছে। একইসঙ্গে বাংলায় গত ২ দিনে ৪ শিশু সহ মোট ৫ জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে বৃষ্টিতে মাটির বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনায়। এদের মধ্যে ৩টি শিশু একই পরিবারের সন্তান ছিল। সেই ৩ সন্তান হারা পিতাদের নিয়েই এদিন থেকে তৃণমূল দিল্লির রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচী শুরু করেছিল যা দিল্লি পুলিশ এসে তুলে দেয়। এরই মাঝে এবার সামনে এসেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার(Narendra Modi Government) ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের পরে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পটিই আর চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মোদি সরকার প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পটিতে কিছু রদবদল ঘটিয়ে আবাস সফট প্রকল্প নামে চালাতে চাইছে। অথচ বাংলার যে ১১ লক্ষ উপভোক্তা প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পের মধ্যে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন তাঁদের কারোর নাম ওই নতুন প্রকল্পে কেন্দ্র সরকার তুলতে চাইছে না। এই অবস্থায় পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে এমনই যে, ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে কেন্দ্র সরকার বাংলার ১১ লক্ষ উপভোক্তার জন্য টাকা না ছাড়লে এদের পক্ষে কেন্দ্রের তহবিলে পাকা বাড়ি না পাওয়া একরকম নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। ফলে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন রাজ্যের উপভোক্তারা। কেন্দ্র টাকা না দিয়ে যদি এই প্রকল্প তুলে দেয়, সেক্ষেত্রে এই উপভোক্তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সব থেকে বড় কথা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের কাজ বাংলায় কোন জেলায় কেমন হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য মোদি সরকার ৬০’র বেশি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। কিন্তু সেই সব কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে ঘুরে গেলেও কোথাও কোনও অনিয়মের প্রমাণ পায়নি।
বাংলায় এই প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ মূলত তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু পদ্মশিবিরের সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্টে এক লাইনও লিখতে পারেনি একটিও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রের টাকা আটকে রাখার সব কৌশলই মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবুও আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন্দ্র। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সারা দেশে যত সংখ্যক বাড়ি তৈরির কাজ এখনও বাকি আছে, তা শেষ করতে হবে। উপভোক্তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতাই যে একমাত্র মাপকাঠি, সেটা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। অথচ সেই বাড়ি তৈরির জন্য টাকাই ছাড়ছে না কেন্দ্র সরকার। এই বিষয়ে নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, প্রতিটি জেলায় উপভোক্তাদের নাম সঠিক ভাবে যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। যখন যেমন রিপোর্ট চেয়েছিল দিল্লি, তখনই তা পাঠানো হয়েছে। এত কিছুর পরেও টাকা দেওয়ার নামগন্ধ করেনি তারা। বাংলাকে কোণঠাসা করতে একশ্রেণির নেতা ক্রমাগত অভিযোগের পর অভিযোগ করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরে। সেগুলির যে ভিত্তি নেই, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় দলের একাংশ। দেশে এখনও প্রায় ৩ কোটি বাড়ি নির্মাণ বাকি। সেটাই ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করতে হবে।