নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রতি বছর সুন্দরবনে(Sundarban) বাঘের হামলায়(Tiger Attack) মৎস্যজীবী(Fisherman) বা মধুকরদের(Honey Collector) প্রাণ হারানোর ঘটনা সামনে আসে। পেটের তাগিদে কেউ চোরা পথে কেউ বা বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের গহণে ঢোকেন মাছ, কাঁকড়া, মীন বা মধুর জন্য। সেখানেই গভীর জঙ্গলে গিয়ে বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন তাঁরা। কেউ বেঁচে ফিরে আসেন, কেউ বা চিরতরে হারিয়ে যান। কারও দেহ মেলে, কারও মেলে দেহাংশ, কারও বা কিছুই মেলে না। ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর এরকমই একটি ঘটনায় মাছ ধরতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন সুন্দরবনের গোসাবার লাহিড়িপুর গ্রামের বাসিন্দা শম্ভু মণ্ডল এবং তাঁর বন্ধু রাধাকান্ত আউলিয়া। ওই ঘটনার প্রায় সাড়ে ৪ বছর পরও রাজ্যের বন দফতর থেকে ক্ষতিপূরণ পাননি মৃত দুই ব্যক্তির পরিবার। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত মামলার রায়ে বন দফতরের নিয়ম মেনে আবেদনকারী দুই ব্যাঘ্রবিধবাকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বন দফতরকে(Forest Department) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর মাছ ধরতে গভীর জঙ্গলে গিয়েছিলেন শম্ভু এবং তার বন্ধু রাধাকান্ত। শম্ভুই প্রথম বাঘের আক্রমণের শিকার হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান রাধাকান্তও। শম্ভুর মৃতদের উদ্ধার হলেও রাধাকান্তর দেহ পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর বন দফতর, পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতকে পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে জানান মৃত দুই ব্যক্তির পরিজনেরা। মামলার রায় পড়ে শোনানোর আগে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বাঘে যদি মানুষকে মারে সেক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ দেখালে বন দফতর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পুলিশের দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বাঘের আক্রমণের উল্লেখ রয়েছে। ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বন দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী বন্যপ্রাণীর আক্রমণে নিহতদের উত্তরাধিকারীরা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত প্রমাণ সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার অধিকারী। তাই মৃত ব্যক্তিরা সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করলেও এক্ষেত্রে দুই ব্যাঘ্রবিধবা শম্ভুর স্ত্রী সরোজিনী এবং রাধাকান্তর স্ত্রী সরস্বতীকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য বন দফতরকে।