নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরবঙ্গের(North Bengal) মালদা জেলা(Malda District) ভারত বিখ্যাত তার আমের জন্য। একই সঙ্গে এই জেলাকে দেশের অনেক মানুষই চেনেন দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী এ বি এ গণি খান চৌধুরীর(A B A Gani Khan Chowdhury) জন্য। দীর্ঘকাল এই জেলা কংগ্রেসের(INC) গড় হয়ে থেকেছে। এমনকি বামেদের ৩৪ বছরের রাজত্বপাটেও সেই গড় ধসাতে পারেনি লাল পার্টি। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল(TMC) তৈরি হওয়ার পরেও সেই ছবিতে বদল আসেনি। মালদা কংগ্রেস প্রভাবিত জেলা হিসাবেই থেকেছে। এর নেপথ্যে ছিল জেলার সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক। কিন্তু উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটি থেকে বিজেপির উত্থান এই জেলাতে প্রভাব ফেলে। সেই নির্বাচনে জেলার ২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে উত্তর মালদায় জয়ী হয়েছিল বিজেপি। দক্ষিণ মালদা অবশ্য কংগ্রেসের দখলেই আছে। কিন্তু গণি খানের জেলায় বিজেপি জয় দেশের রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। একুশের বিধানসভা ভোটে এবার এই জেলা থেকেই ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৮টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। ৪টিতে জেতে বিজেপি। এদিন সেই মালদায় দাঁড়িয়েই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee),‘বার বার পাশাপাশি দুটো আসন থেকে কংগ্রেস জিতেছে। কিন্তু কী করেছে মালদার জন্য? বরকতদা যখন ছিলেন কিছু করেছিলেন।’
বস্তুত বাংলার মাটিতে বিজেপির উত্থানই এই জেলায় ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটিয়ে দিয়েছে। সেই কারণেই জেলার সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক যেমন বিজেপি বিরোধী তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে গিয়েছে তেমনি আদিবাসী ও তপশিলী ভোট চলে গিয়েছে বিজেপির দিকে। জেলার হিন্দু ভোটও বিজেপির দিকেই ঝুঁকে আছে। অন্তত একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল সেই কথাই বলছে। সামনেই ২৪’র ভোট। সেই ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা কী বার্তা দেন সেই দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সকলে। দেখে গেল তিনি নিশানা বানালেন বাম-কংগ্রেসকে। সাফ জানালেন, ‘মালদহের জন্য কংগ্রেস কিছুই করেনি’। সেই সঙ্গে বললেন, ‘গণি খানের পরিবারের সদস্যরা রাজনীতি করুক তা নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু ওদের নেতা সিপিএম। যে সিপিএম আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে বার বার সেই সিপিএমকে আমি কোনওদিনও ক্ষমা করব না। ওরা সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করবে। করুক। আমি একাই লড়বো বিজেপির বিরুদ্ধে। ওরা বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এইসব করছে। আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি এরা হচ্ছে ভোটের কোকিল। ভোটের সময় হলেই এরা ভোট চাইতে চলে আসে। সারা বছর এদের দেখা মেলে না। তখন থাকি শুধু আমরা তৃণমূল।’