এই মুহূর্তে




মায়ের সামনে মৃত্যুর কোলে ছেলে, মোবাইল টাওয়ার থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা কিশোরের

নিজস্ব প্রতিনিধি: মায়ের সামনে মরন ঝাঁপ দিল সন্তান। যে কথা ভাবলেই শিউড়ে উঠতে হয় সেই দৃশ্য স্বয়ং প্রত্যক্ষ্য করেছেন এক মা। এর মতো যন্ত্রণাদায়ক আর বোধহয় কিছু হয় না। মৃতের নাম অপূর্ব হাজরা (১৫)। মা সাগরিকা হাজরাকে শেষ বারের মতো দেখতে চেয়ে ফোন করেছিল ছেলে। মা বুঝতেই পারেননি ছেলের মনে কী চলছে। ফোন পেয়ে মা কানে ফোন নিয়েই ছুটতে ছুটতে আসেন বাড়ির কাছে একটি মোবাইল টাওয়ারের নিচে।

ফোনেই মাকে অপূর্ব বলেছিল, ‘আমি আর বাঁচব না। টাওয়ার থেকে ঝাঁপ দেবো।মা বারবার নিষেধ করেছিলেন। ভেবেছিলেন মায়ের মুখটা একবার দেখতে পেলেই বুঝি ছেলের মাথা থেকে এসব উদ্ভট খেয়াল চলে যাবে। তাই ছুটতে ছুটতে এসেছিলেন মোবাইল টাওয়ারের সামনে। কিন্তু সব চেষ্টাই হল বৃথা। মায়ের চোখের সামনে টাওয়ারের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল কিশোর। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাড়হিম করে দেওয়া ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার জীবন্তি গ্রামে। চোখের সামনে ছেলেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন যে মা তাঁর কি আর কথা বলার মতো অবস্থা থাকে! স্বভাবতই বিপর্যস্ত অবস্থা সাগরিকা দেবীর। কথাটুকু পর্যন্ত বলতে পারছেন না। ভাইফোঁটার মতো এমন শুভ দিনে এই দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম।

জানা গিয়েছে, অপূর্বরা দুই ভাই। মেয়ে নেই, দুই ছেলেকেই মনের মতো করে মানুষ করছিলেন সাগরিকা দেবী। নিজের বোন নেই। প্রতি বছর তাই প্রতিবেশী বোনদের থেকে ফোঁটা নেয় অপূর্বরা। এবারও তেমনই কথা ছিল। কিন্তু ফোঁটা নিতে যাওয়ার আগে কী পোশাক পরবে তা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বচসা শুরু হয়। অপূর্ব বড় ছেলে, তাই বচসা থামাতে গিয়ে ছোট ছেলের হয়ে একটু কথা বলে ফেলেছিলেন সাগরিকা হাজরা। অপূর্বকে সামান্য বকাবকি করেন। অভিমানী অপূর্ব এরপর রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের পাশে মাঠে থাকা মোবাইল টাওয়ারে উঠে পড়ে। সেখানে দাঁড়িয়েই মাকে ফোন করে টাওয়ারের নীচে আসতে বলে সে। জানায় খুব দেখতে ইচ্ছা করছে মাকে। ছেলে কিছু বিপদ ঘটাতে যাচ্ছে তা আঁচ করেছিলেন মা। তিনি ছেলের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই ছুটে মোবাইল টাওয়ারের নীচে যান।

টাওয়ারের উপর ছেলেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই বুক কেঁপে উঠেছিল সাগরিকা দেবীর। তিনি বারবার বলতে থাকেন, ‘বাবা নেমে আয়। এমন কিছু করিস না।কিন্তু মায়ের আকৃতি তখন না শোনার পণ করেছে যে অপূর্ব। মায়ের কথা না শুনেই সে উঁচু টাওয়ার থেকে নীচে ঝাঁপ দেয়। এদিকে তার আগেই ছুটে এসেছিলেন স্থানীয়রা। তারা মাছ ধরার জাল জোগার করে অপূর্বকে বাঁচানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। উঁচু টাওয়ার থেকে নীচে পড়ার সময় নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিয়েছিল অপূর্ব। ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৫ বছরের কিশোরের। হাহাকার করে ওঠেন সাগরিকা দেবী। প্রতিবেশীরা অপূর্বকে উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানান হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে নাবালকের। ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

হাকিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশ ফিরে যাওয়ার জন্য অনুপ্রবেশকারীদের ভিড় বাড়ছে

এবার রবিবারেও মিলবে কল্যাণী ,কৃষ্ণনগর এসি লোকাল ট্রেন ঘোষণা পূর্ব রেলের

শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে উদ্ধার ৪ নাবালিকা, টাকার লোভ দেখিয়ে পাচারের অভিযোগ

উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত গ্যাংস্টার মহম্মদ সহরাব রিপন স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার

SIR ফর্ম বিলির ক্ষেত্রে কলকাতা পিছিয়ে, দ্রুত কাজ শেষ করতে সময়সীমা নির্ধারিত করল কমিশন

বনগাঁয় সন্দেহজনক ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে এল মৃত মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ