নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতিতে আবারও শোরগোল ফেলে দিলেন বাঁকুড়া সদর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রী শেখর দানা। কিছুদিন আগে চপের দোকানে গিয়ে চপ ভেজে সাড়া ফেলেদিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন রাজ্যের শাসক দল ও মুখ্যমন্ত্রীকে কৌশলী ভাবে কটাক্ষ হানতেই তিনি ওই কাজ করেছেন। কিন্তু সোমবার সেই দানাই বাঁকুড়া পুরসভায় গিয়ে ফুল আর মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা দিলেন পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূলের নেত্রী অলকা সেন মজুমদারকে। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, দানা কী এবার এক পা এক পা করে এগিয়ে চলেছেন তৃণমূলে যোগদানের পথে! সেই সম্ভাবনাকে আরও জোর জল্পনা বানিয়ে দিয়ে অলকা জানিয়ে দিলেন, তৃণমূলে আসতে চাইলে দানাকে স্বাগতই জানানো হবে। এর জেরে এখন অনেকেই মনে করছেন দানার তৃণমূলে যোগদান এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আর একই সঙ্গে এই ঘটনায় চাপে পড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
সোমবার সকালে নিলাদ্রী শেখর দানা সোজা হাজির হন বাঁকুড়া পুরসভা ভবনে। সেখানে তিনি পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূল নেত্রী অলকা সেন মজুমদারের হাতে ফুল ও মিষ্টি তুলে দেন। পাশাপাশি পুরপ্রশাসকের ঢালাও প্রশংসাও করেন তিনি। পরে গোটা বিষয়টঙ্কে নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেন দানা। যদিও তাঁর মুখে অলকার প্রশংসাকে রীতিমত ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যার জেরে অলকা নিজেও জানিয়েছেন, তৃণমূলে আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত। দিন কয়েক আগেই দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিলেন নিলাদ্রী শেখর দানা। তারপর থেকে তাঁর একের পর এক কর্মকাণ্ড নজর কাড়ছে রাজ্য রাজনৈতিক মহলে। জানা গিয়েছে, এদিন শুধু অলকা সেন মজুমদারের সঙ্গেই নয় দানা দেখা করেছেন পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা তৃণমূলের শিক্ষক নেতা গৌতম দাসের সঙ্গেও।
যদিও দানা এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, নিজের বিধানসভা এলাকায় পুরসভার দুটি কাজের তদরকি করতেই নাকি এদিন তিনি পুরসভায় গিয়েছিলেন। তবে তাঁর মুখে পুর প্রশাসকের প্রশংসা অন্য সুরের ইঙ্গিতই দিচ্ছে। বিধায়ক নিজ মুখে বিষয়টিকে মোটেই ইঙ্গিতবাহী নয় বলে দাবি করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহল বিষয়টিকে যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছে। দানা এদিন জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘ ছয় বছর আমি কাজ করেছি। অনেক সময় সহযোগীতা পেলেও অসহযোগীতাও পেয়েছি। এখানে অনেকেই আমার চেনা। আজকে সকালে এসেছিলাম দুটি প্রোজক্ট নিয়ে। সৌজন্য বিনিময় করে গেলাম।’ অন্যদিকে, অলকা জানিয়েছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন। সেই কারণে অনেক বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছেন। তাই আমড়া এখানে আশার ইঙ্গিত পাচ্ছি। তৃণমূলের দরজা সবসময়ের জন্য খোলা রয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন যজ্ঞে বিজেপির বিধায়কেরাও সামিল হোন আমরা সবসময় চাইব।’