এই মুহূর্তে




সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিয়ো ঘিরে শোরগোল

Courtesy - Google and Youtube




নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের(Loksabha Election 2024) আবহে সন্দেশখালির(Sandeshkhali) ঘটনা নিয়ে বড়সড় অভিযোগ উঠে গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগ উঠে এসেছে গোপন ক্যামেরায় তোলা সন্দেশখালিরই এক বিজেপি(BJP) নেতার দাবির ভিত্তিতে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে হইচই ফেলে দেওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল(Gangadhar Kayal) দাবি করছেন যে, সন্দেশখালিতে ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো। ধর্ষণ-সহ বিভিন্ন অভিযোগ সাজানো হয়েছে পরিকল্পনা মাফিক। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গঙ্গাধর একটি ঘরে চেয়ারের ওপরে বসে আছেন। কেউ বা কারা তাঁকে সন্দেশখালির ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন করে চলেছেন। তিনি আড্ডার ছলে প্রশ্নকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন। বার বার উঠে আসছে শুভেন্দুর নাম। গঙ্গাধর বলছেন, ‘এই আন্দোলন এত দিন টিকে আছে কেন? তিনটে ছেলে এ দিক ও দিক যাচ্ছে, গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছে। শুভেন্দুর আমাদের ওপরে আস্থা আছে। শুভেন্দু এক বার ঘুরে গিয়েছে, তাতেই আন্দোলন এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে।’ ভিডিয়োতে তাঁকে স্বীকার করতে শোনা গিয়েছে, শুভেন্দু টাকা এবং মোবাইল ফোন দিয়ে গিয়েছেন তাঁদের। কারণ এই ধরনের কাজ খালি হাতে হয় না। আর সেই স্বীকারোক্তির জেরেই এখন রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও তোলাই হয়েছে সন্দেশখালির সিংপাড়া এলাকায় গঙ্গাধরের বাড়িতে। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তিনি মণ্ডল সভাপতি নন। কেবল তাঁদের দলের সমর্থক। তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ নন বলে দাবি করেছেন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বিবেক রায়। তিনি বলেন, ‘এর আগেও ওর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। বছর খানেক আগে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মারধরও খায়।’ তবে বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারি প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োটি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘তৃণমূল সব কিছুতেই সাজানো ঘটনা দেখে। সন্দেশখালির মহিলারা এসে কোর্টে তাঁদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। রেখা পাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে শিবু সর্দারের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারা দেওয়া হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনাকে কোনও ভাবেই তৃণমূল আড়াল করতে পারবে না।’ ভিডিও প্রসঙে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘ভিডিয়োটি আমি দেখিনি। কার গলা খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলব।’ ভিডিয়োতে গঙ্গাধরকে শুভঙ্কর গিরি নামের এক জনের নাম নিতে শোনা যায়। গঙ্গাধর বলেছেন, ‘শুভঙ্কর ছেলেটা ভাল ছিল। কিন্তু টাকার গোলমালের জন্য ও পরে হঠে গেল।’ শুভেন্দু পিএ পীযূষও সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন গঙ্গাধর। জানান, শুভঙ্করই গ্রামবাসীদের ‘ব্রেনওয়াশ’ করেছিলেন।

ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্রশ্নকর্তা গঙ্গাধরকে বলছেন, ‘দাদা, তোমরা কী লেভেলের কাজ করেছ, বুঝতে পারছ? ধর্ষণ হয় নাই, তাকে ধর্ষণ বলে চালিয়েছ! তোমার বাড়ির বৌকে দিয়ে এই কাজ করাতে পারতে? আমরা তো পারব না।’ এই প্রশ্ন শুনে সম্মতিসূচক হাসি হেসেছেন গঙ্গাধর। এরপরেই প্রশ্ন কর্তা গঙ্গাধরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কী ভাবে ওদের ‘ব্রেনওয়াশ’ করালেন?’ উত্তরে গঙ্গাধর বলেন, ‘‘শুভেন্দুদার নির্দেশেই আমরা এই কাজ করেছি। উনি আমাদের সাহায্য করেছেন। শুভেন্দুদা বলেছেন, এটা না করলে, তাবড় তাবড় লোকদের গ্রেফতার করানো যাবে না। আমরাও ওখানে দাঁড়াতে পারব না।’ তারপরেই গঙ্গাধরের মুখে এসেছে শুভঙ্করের নাম। এরপরেই প্রশ্ন কর্তা গঙ্গাধরকে জিজ্ঞাসা করেন যে, ‘অসত্য ধর্ষণের অভিযোগ লেখাতে কী ভাবে রাজি হলেন মহিলারা?’ গঙ্গাধর তার উত্তরে বলেন, ‘আমরা যা বলেছি, ওরা শুনেছে। কেউ না করেনি। ওদের বলেছিলাম, যদি আপনারা অভিযোগ না লেখান, তা হলে আপনাদের এই আন্দোলন সফল হবে না। এখানে আপনাদের টিকতেও দেবে না।’ রেখা প্রথমে অভিযোগ দায়ের করার পরে তাঁকে দেখে বাকিরাও সাহস পান বলে জানিয়েছেন গঙ্গাধর। ভিডিওতে গঙ্গাধর এটাও জানিয়েছেন যা, সন্দেশখালির আন্দোলন শুরুর পর সেখানে বিভিন্ন কমিশন গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছিল। তখন আন্দোলনকারী মহিলারা কেউ কেউ ভয় পেয়ে যান বলে জানান গঙ্গাধর।

এর পরেই গঙ্গাধরের মুখে জবা সিংহ নামের এক মহিলার কথা শোনা গিয়েছে। গঙ্গাধরের দাবি অনুযায়ী, কেন্দ্রের পাঠানো এসটি কমিশনার জবার সঙ্গে কী হয়েছে বিশদে জিজ্ঞাসা করলে জবা কোনও কথা বলতে পারেননি। কারণ তিনি ‘ঘাবড়ে’ জবা তিন জনের নাম নিয়েছিলেন নিজের অভিযোগে, তাঁরা হলেন শাহজাহান শেখ, উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরা। গিয়েছিলেন। গঙ্গাধর এ-ও জানান, জবাকে ‘ট্রেনিং’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা নিতে পারেননি। প্রত্যেকেই গ্রেফতার হয়েছে। গঙ্গাধরের এই ভিডিও বা দাবি ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশের দাবি, এই ভিডিও এটা প্রমাণ করে না যে সব কিছু সাজানো গোছানো বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। একমাত্র যদি আদালতে এসে গঙ্গাধর এই কথা বলে তখন তা মান্যতা পেলেও তা পেতে পারে। তাই এই ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালেও যারা গ্রেফতার হয়েছে তাঁদের ছাড়া পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে লোকসভা নির্বাচনের আবহে সন্দেশখালি নিয়ে শুভেন্দু থেকে বিজেপি মায় রেখা পাত্রকেও অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গেদে সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষকদের জমির ফসল লুট করছে বাংলাদেশী দুষ্কৃতীরা

ফারাক্কায় নাবালিকা ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে ৬০ দিনেই বিচার শেষ, শুক্রবার সাজা ঘোষণা

বাংলায় খুন করে গুজরাতে গা ঢাকা, পুলিশের জালে তবলাবাদকের ‘খুনি’

ফিরে দেখা: প্রথমবার মাদারিহাট বিধানসভার দখল নিল তৃণমূল

সীমান্তের ছাত্র-ছাত্রী ও যুব সমাজকে মাঠমুখী করতে বিশেষ উদ্যোগ

মালদায় আমের দেশে এবার ফলছে কমলালেবু

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর