নিজস্ব প্রতিনিধি: এই পুজো (DURGA PUJA) প্রায় ১৮৬ বছরের পুরানো। হুগলি জেলার পান্ডুয়ার বৈঁচি গ্রামের জমিদার ছিলেন ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়। জমিদাররাই আয়োজন করতেন পুজোর। সেই পুজো এখন স্কুলপড়ুয়াদের কাঁধে। বিদ্যালয়েই হয় প্রতিমা তৈরি থেকে পুজো।
জমিদার বিহারীলাল মুখোপাধ্যায়ের বাবা ছিলেন ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়। তিনিই প্রচলন করেছিলেন এই পুজোর। তবে বিহারীলাল মুখোপাধ্যায় ছিলেন নিঃসন্তান।
শোনা যায়, জমিদার বিহারীলাল মুখোপাধ্যায় ১৮৭০ সালে উইল করেছিলেন, তাঁর সম্পত্তি থেকেই চলবে পুজো। ১৮৭৭ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরামর্শে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অবৈতনিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং দাঁতব্য চিকিৎসালয়ের। বিদ্যালয় রয়েছে জমিদার বাড়িতেই। রয়েছে প্রাচীন খিলান। ক্লাস রুমগুলি থেকে সামান্য দূরেই এখানেই হয় দুর্গা এবং জগদ্ধাত্রী দেবীর আরাধনার মূল বেদী। এখনও ঐতিহ্য ধরে রেখে দুর্গা ও তাঁর সন্তান-সন্ততির পুজো হয় এক চালাতেই। প্রতিমাতেও লক্ষ্য করা যায় প্রাচীন ধাঁচ। দেবীর চোখ টানা টানা। আর মহিষাসুরের গায়ের রঙ সবুজ।
বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যালয়ের এক চত্বরেই প্রতিমা তৈরি হয়। তারপর তা প্রতিষ্ঠা করা হয় মূল বেদীতে। পুজো হয় বৈদিক মতে। আগে ছাগল বলি হলেও এখন তা বন্ধ। বিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আগে কাঁধে করে চারটি পাড়া ঘুরিয়ে তবে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হতো। তবে সেই জমিদারি আমলের মত এখন এত লোক বল নেই। তাই ট্রাক্টরে করে চারটি পাড়া প্রদক্ষিণ করানো হয় প্রতিমাকে। তারপর বিদ্যালয়ের পুকুরে নিরঞ্জন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর ভার এখন স্কুল পড়ুয়া এবং শিক্ষক- শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের কাঁধেই। পুজোও হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। এভাবেই হয়ে আসছে পুজো।