নিজস্ব প্রতিনিধি: মাওবাদী দমন অভিযান থেকে গাড়িতে চেপে ফেরার সময় ছত্তিশগড়ে জঙ্গলের মধ্যে পুঁতে রাখা আইইডি’র বিস্ফোরণে বুধবার প্রাণ হারিয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) ১০ জওয়ান এবং গাড়ির চালক। জওয়ানদের উপর হামলার এই ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ কেজি আইইডি বিস্ফোরক, এমনটাই খবর সূত্রের।
বুধবার অতর্কিতে এই বিস্ফোরণের অভিঘাতে রাস্তায় বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে, শেকড় ছিন্নভিন্ন হয়ে উপড়ে গিয়েছে বড় গাছ। দান্তেওয়াড়া জেলায় বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলের ছবি দেখে মনে করা হচ্ছে, অতর্কিতে হামলা চালানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক ব্যবহার করেছিল মাওবাদীরা। রাস্তায় বিশাল জায়গাজুড়ে গর্ত তৈরি হয়েছে। টেরিটোরিয়াল আর্মির প্রাক্তন প্রধান মেজর জেনারেল অশ্বিনী সিওয়াচ (Major General Ashwini Siwach) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জওয়ানদের ভ্যানে হামলা চালানোর জন্য মাওবাদীরা ১০ গুণ পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার করতে পারে।
ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিহত জওয়ান এবং গাড়ির চালকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। একটি টুইট বার্তায় অমিত শাহ লিখেছেন, ‘দান্তেওয়াড়াতে ছত্তিশগড় পুলিশের উপর কাপুরুষোচিত হামলায় ব্যথিত। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং রাজ্য সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি। শহীদ জওয়ানদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সমবেদনা।’
উল্লেখ্য গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে মাওবাদীদের পাকড়াও করতে বুধবার সকালে বস্তারের দান্তেওয়াড়ায় গিয়েছিল নকশাল দমনে গঠিত রাজ্য পুলিশের বিশেষ শাখা ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) জওয়ানরা। আরানপুর থানার অন্তর্গত এক জঙ্গলে কুখ্যাত মাওবাদীরা ডেরা বেঁধেছে খবর পেয়েই অভিযান চালাতে যান তাঁরা। যদিও পুলিশের বিশেষ অভিযানের টের পেয়েই গভীর জঙগলে চলে যায় মাওবাদীরা। অভিযান চালিয়ে ফেরার পথে জমিতে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে কার্যত উড়ে যায় পুলিশ জওয়ানদের বহনকারী গাড়িটি। বিস্ফোরণের পরেই গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়।
ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১০ পুলিশ কর্মী ও গাড়িতে থাকা চালকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। বিস্ফোরণের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশের বিশাল বাহিনী। নিহত জওয়ানদের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘাতক মাওবাদীদের ধরতে এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ বাহিনী। পাশাপাশি জঙ্গলের রাস্তায় আর কোনও বিস্ফোরক পুঁতে রাখা হয়েছে কিনা, বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের সদস্যরা খতিয়ে দেখছেন।