কৌশিক দে সরকার: দাক্ষিণাত্যের একটি রাজ্য হাতে এসেছিল গেরুয়া ব্রিগেডের। সেই রাজ্যকে কামড়ে ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল মোদি বাহিনী। অনেকটা একুশের ভোটে বাংলায়(Bengal) যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি(BJP), সেই একই কায়দায় তাঁরা ঝাঁপ দিয়েছিল কন্নড়ভূমেও। পদ্মপার্টির ৫ মহারথী সেখানে ভোট প্রচারে গিয়ে ১ মাসের মধ্যে করেছিলেন মোট ৬৯টি সভা, ৪১টি রোড-শো। কিন্তু তারপরেও জয়ের মুখ দেখতে পারল না পদ্মপার্টি। দক্ষিণ ভারতের একমাত্র রাজ্য থেকেও নিভে গেল বিজেপির বাতি। বদলে গেল দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রও। গেরুয়া এখন ক্রমশ কোনঠাসা হচ্ছে দেশের বুকে।
আরও পড়ুন বিগত অর্থবর্ষে বাংলা থেকে ১৩০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি
তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে কর্ণাটকের(Karnataka) বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) করেছেন ১৯টি সভা ও ৬টি রোড শো। বিজেপির সেকেন্ড ইন কম্যান্ড তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah) করেছেন ১৬টি সভা ও ১৫টি রোড শো। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(J P Nadda) করেছেন ১০টি সভা ও ১৬টি রোড শো। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ(Yogi Adityanath) করেছেন ৯টি সভা ও ৩টি রোড শো। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা করেছেন ১৫টি সভা ও ১টি রোড শো। কিন্তু এত কিছু করেও তাঁরা ব্যর্থ হলেন কন্নড়ভূমে দলকে জেতাতে। হাল এতটাই খারাপ যে ৭ অঙ্কের ঘরেও পা রাখতে পারেনি বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা। অথচ পদ্মপার্টির সবাই বেশ জোর গলায় দাবি করেছিলেন বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সেখানে সরকার গড়বে। বাস্তব ভিন্ন ছবি তুলে ধরল। দেশ থেকে আরও একটি রাজ্য থেকে ধুয়ে মুছে গেল বিজেপির শাসন। মানচিত্রে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যেগুলি বাসে এখন কেবলমাত্র বিজেপি ও বিজেপির মিত্র দলগুলির শাসনের অধীনে রয়েছে সিকিম, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও পণ্ডিচারী।
আরও পড়ুন গোষ্ঠী সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ আকোলা, নিহত ১, আহত ৮, গ্রেফতার ২৬
তথ্য বলছে, দেশের মধ্যে ১৫টি রাজ্যে এখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে গেরুয়া শাসন চলছে। কিন্তু হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও বাংলায় নেই গেরুয়া রাজত্ব। এই ১৪টি রাজ্যে কার্যত গেরুয়া বিরোধী মানসিকতা এখন তুঙ্গে উঠেছে। দেশের ৪৩ শতাংশ এলাকা রয়েছে গেরুয়ার অধীনে, ৫৭ শতাংশ এলাকা রয়েছে বিরোধীদের দখলে। দেশের জনতার ৪৪ শতাংশ রয়েছেন গেরুয়ার শাসনে, ৫৬ শতাংশ রয়েছে বিরোধীদের শাসনে। সময় যতই গড়াবে ততই কিন্তু পাল্লা ভারী হবে বিরোধীদের। বিজেপির হাত থেকে আরও জমি হাতছাড়া হবে। আরও বদলাবে দেশের মানচিত্র। এখন রাজ্যে রাজ্যে আওয়াজ উঠেছে ‘বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও’।
