নিজস্ব প্রতিনিধি: রবি ভোরে পাঞ্জাবের(Punjab) মোগা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন খলিস্থানি আন্দোলনের(Khalistan Movement) নেতা অমৃতপাল সিং(Amritpal Singh)। এদিনই তাঁকে পাঞ্জাব থেকে যোজন যোজন দূরে থাকা অসমের(Assam) ডিব্রুগড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর সেই কারণেই ডিব্রুগড় বিমানবন্দর কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি ডিব্রুগড় জেলেও কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ তৈরি করে ফেলা হয়েছে। এদিনই অমৃতসর থেকে অমৃতপালকে ডিব্রুগড়ের Mohanbari Airport নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিশেষ বিমানে করে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে Dibrugarh Central Jail-এ। অমৃতপালকে এই অমৃতসর থেকে ডিব্রুগড় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকছে জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ বা National Security Agency এবং পাঞ্জাব পুলিশের উচ্চ আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে মোতায়েন থাকছে অসম পুলিশের একটি বড়সড় বাহিনীও।
আরও পড়ুন খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের গ্রেফতার
বিমানবন্দরের মতো জেলের অন্দরেও বিশেষ নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলা হয়েছে। Dibrugarh Central Jail-এ ৩ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। যেখানে খলিস্তানি নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের রাখা হবে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা, জোরালো সার্চ লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেল সূত্রে খবর, জেলের নিরাপত্তায় সিআরপিএফ ছাড়াও কম্যান্ডো বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। Dibrugarh Central Jail তৈরি হয়েছিল ১৮৫৯-’৬০ সালে। এটা সে রাজ্যের সবচেয়ে নিরাপদ জেল। উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন জেল এটি। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আলফা-র বহু শীর্ষস্তরের নেতাদের এই জেলেই বন্দি রাখা হত। ফলে কড়া নিরাপত্তায় মোড়া এই জেলকেই সুরক্ষিত বলে মনে হয়েছে পুলিশের। শুধু অমৃতপাল নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী পপ্পলপ্রীত সিংহ-সহ আরও ৯ জনকে আগেই এই সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে আসা হয়েছে।
আরও পড়ুন সৌদির সাহায্যে সুদান থেকে কিছু ভারতীয় নাগরিকের জেড্ডায় পা
অমৃতপাল গ্রেফতার হওয়ার পরে এদিন সকালে এক সাংবাদিক বৈঠকে পঞ্জাব পুলিশের আইজি সিখচেইন সিংহ গিল জানান, ‘রবিবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ মোগার রোড় গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অমৃতপালকে। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল। ফলে ওঁর হাতে আর কোনও বিকল্প পথ ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই আত্মসমর্পণ করেছেন।’ অর্থাৎ অমৃতপাল আগে থেকে পুলিশকে ডেকে এনে আত্মসমর্পণ করেছেন এই তত্ত্বে সায় দিতে নারাজ পাঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসন। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, পঞ্জাব এবং দিল্লির যে জেলে অমৃতপালকে রাখা সম্ভব ছিল, সেই সব জেলে বিভিন্ন রাজ্যের গ্যাংস্টার এবং তাঁদের শাগরেদরা বন্দি। তা ছাড়া, এই সব জেলে বন্দি বেশ কিছু গ্যাংস্টারের সঙ্গে খলিস্তানি সংগঠনের ভাল যোগাযোগ রয়েছে। ফলে পঞ্জাব বা দিল্লির জেলে রাখলে সেই সব গ্যাংস্টারদের সঙ্গে অমৃতপালের একটা চক্র গড়ে তোলার আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠতে পারতো। শুধু তাই-ই নয়, জেলের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারতো। তাই কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চায়নি পঞ্জাব এবং দিল্লি পুলিশ।