নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলে কথা। তাতে বাড়াবাড়ি থাকবে না, থাকবে না মাত্রাতিরিক্ত নিশ্ছিদ্র ব্যারিকেড, এমনটা হওয়া কার্যত অসম্ভব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে বিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচাতে তাঁর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কালো পোশাক খোলানো হবে এমন ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শুধু যে বিরল তাই নয়, রীতিমতো হাস্যকরও বটে। কিন্তু আজব, কিংবা হাস্যকর যাই বলুন না কেন গতকাল অর্থাৎ রবিবার মহারাষ্ট্রের পুনের MIT কলেজ চত্বরে যারা প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন তাঁরা এমন অভিজ্ঞতারই সাক্ষী থেকেছেন।
গতকাল অর্থাৎ রবিবার মহারাষ্ট্রের এই পুনেতেই মেট্রো রেলের উদ্বোধন করতে যান দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তাঁকে কার্যত টিকিট কেটে কচিকাচাদের সঙ্গে নিয়ে খোশ মেজাজে মেট্রো রেলে সওয়ার করতে দেখা যায়। এরপরেই পুনের MIT কলেজে তাঁর কিছু সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা ছিল। কলেজ চত্বরে প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন কয়েকশো মানুষ। সেখানেই এই হাস্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, আমন্ত্রিত অতিথিদের গায়ে কালো যা কিছু কালো পোশাক ছিল সবকিছু খুলতে বাধ্য করা হয়েছে বলপূর্বক। মাস্ক, শার্ট, রুমাল তো আছেই, বাদ যায়নি কালো মোজাও। ওই অনুষ্ঠানে যাদের কাছেই এই সমস্ত কালো জিনিস ছিল তাঁদের থেকে সবকিছুই কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
তবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন যারা, তাঁদের অবশ্য অন্য যুক্তি। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই কলেজ চত্বরে নিষিদ্ধ ছিল কালো পতাকা। যাতে কেউ প্রধানমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ না দেখাতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা। কিন্তু তার জায়গায় আমন্ত্রিতদের গা থেকে কেন কালো পোশাক খোলা হয়েছে সেটা স্পষ্ট নয়। সেই ব্যাপারে কারোর কাছেই সুস্পষ্ট কোনও উত্তর নেই।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুনের পুলিশ কমিশনার অমিতাভ গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘ নিয়মনীতি নিয়ে নিশ্চয়ই কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কারণ নির্দেশটি ছিল কালো পতাকা এবং কালো কাপড়ের টুকরো সঙ্গে রাখা যাবে না, কিন্তু কালো পোশাক সম্পর্কে কোনও কিছুই বলা হয়নি।’
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন মহারাষ্ট্রের পুনেতে পৌঁছান তখন তাঁর কনভয় ঘিরে কালো পতাকা নিয়ে ‘গো ব্যাক মোদি’ শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান একদল সমাজকর্মী। এরপরেই ওই কলেজ চত্বরে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় হয় বলে খবর।