24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:06 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: পরিবারের কেউ কোনওদিন প্রতিমা গড়েনি। কিন্তু পাল বংশের মর্যাদা যেন ফিরে এল ক্লাস নাইনের ছাত্র অনুভব পালের হাত ধরেই। ঝাড়গ্রাম শহরের বামদা এলাকার বাসিন্দা অনুভব গতবছরের পর এবছরও দুর্গা প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছে। একটি নয়, একসঙ্গে এলাকার চারটি পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা ভরসা করেছে তার ওপরই। অনলাইনে হচ্ছে স্কুলের ক্লাস, ওই ক্লাস করার পর দিনের বাকিটা সময় কেটে যাচ্ছে দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিকের মূর্তি গড়তেই।
ঝাড়গ্রামের বাণীতীর্থ হাইস্কুলের ছাত্র অনুভব। ছোটবেলা থেকেই মাটি নিয়ে ঘাটাঘাটি তার নেশা। বাবা মিঠুন পালও পেশায় মৃৎশিল্পী। কিন্তু মাটির হাড়ি, সরা বানানোর কাজ করেন তিনি। তবে পরিবারের কোনও পূর্বপুরুষ প্রতিমা গড়েননি। তিনি জানান, সাড়ে পাঁচ বছর বয়স থেকেই মাটি দিয়ে পুতুল তৈরি করত অনুভব। মাটির কাজে একটা আলাদা আগ্রহ রয়েছে। নিজের তো বটেই, বন্ধুদেরও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার সময়ও অনুভবই মাটির তৈরি হাতের কাজ করে দিত। এখন করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ স্কুল। অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা। ক্লাস কখনও মিস করে না অনুভব। তারপর মনোযোগ সহকারে তৈরি করে কাঠামো। খড়ের কাজ, তার ওপর মাটির প্রলেপ—সমস্তটাই একা হাতে করে সে। বাবা যতটা পারেন আর্থিক সাহায্য করেন।
গতবছরই প্রথম দুর্গা প্রতিমা তৈরির বরাত পায় সে। এবছর একসঙ্গে চারটি পুজোর প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব তার কাঁধে। অনুভব জানায়, প্রতিমা তৈরির কৌশল কখনও কারও কাছে শেখেনি সে। তার ইচ্ছেই তাকে এই কাজে উৎসাহ জোগায়। তবে করোনাকালে অনেক পুজোরই বাজেট কমেছে। কমদামে দুর্গা প্রতিমা চাইছেন সকলে। উদ্যোক্তাদের বাজেট মাথায় রেখেই কম খরচে মূর্তি তৈরি করছে সে। অনুভবের কথায়, ‘আয়ের জন্য আমি প্রতিমা তৈরি করি না, এটা আমার সখ। কাঁচামাল কেনার টাকা উঠে আসলেই হবে।’ শুধু দুর্গা নয়, গত একবছর ধরে গণেশ, লক্ষ্মী, বিশ্বকর্মাও গড়ছে সে। বড় হয়ে এই পেশাকেই বেছে নেবে বলে জানাল অনুভব।