নিজস্ব প্রতিনিধি: পুজো আসন্ন। বর্তমানে সমাজ আধুনিকা। তাই সমাজের আধুনিকতার রেশ ধরে কলকাতা থেকে শহরতলির সবকটি পুজো কমিটি নিত্যনতুন থিমে সাজাচ্ছে। এবার কলকাতার থিমের একাধিক প্যান্ডেলের দরজা খুলে যাচ্ছে আজ থেকেই। নিত্যনতুন থিমে সেজে উঠছে গোটা তিলোত্তমা। তেমনই এবার টবিন রোডের হাসিখুশি ক্লাবের পুজোর থিমে ফুটে উঠছে একটি অভিনবত্বের ছোঁয়া।
যেখানে চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। যাদের মধ্যে কেউ জন্মাবধি দুগ্গা ঠাকুরের মুখ দেখেনি। কেউ বা চোখে দেখলেও অন্তরে গেঁথে নিতে পারেনি উমার মমতাভরা দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু পুজোটা সবার জন্যে, সারা বছরের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট ভুলে সবার সঙ্গে তাঁরাও এই ৪-৫ টি দিন আনন্দে মেতে ওঠে। তাঁদের নজরে যেন আর কিছুই থাকেনা এই সময়ে। আসলে মা তো সবার তাই না! মা দুর্গাকে (Durga) সেই সকল বাচ্চারা কী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে, কীভাবেই বা অনুভব করে, তাদের সেই অন্তর্দৃষ্টির উপর ভিত্তি করেই এবার গড়ে উঠছে বরানগর (Baranagar) হাসিখুশি ক্লাবের থিম। থিমেও যেমন থাকছে অভিনবত্বের ছোঁয়া, তেমনই প্রতিমাতেও থাকছে চমক।
সবথেকে বড় বিষয় প্রতিমার শৈলীতে নয়, ক্লাবের পুজোর প্রতিমার চক্ষুদান করবে দৃষ্টিহীন (Blind) সেই শিশুরাই। ক্লাবের এই অভিনবত্বকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। খুব বেশিদিনের পুজো নয়, বরানগর হাসিখুশি ক্লাবের এই পুজো। এর বয়স মাত্র একবছর। সামাজিক বার্তা দিতে গতবছর শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো (Durga Puja)। সারা বছরই ক্লাবের তরফে দুস্থ বাচ্চাদের জন্য একাধিক সহায়তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তাদের পুজোয় নতুন নতুন জামাকাপড় দেওয়া হয়, এছাড়াও বছরের বিভিন্ন সময়ে এলাকার দুঃস্থ শিশুদের জন্যে নানারকম পরিকল্পনা করে থাকে এই পুজো কমিটি। গতবছর চাহিদাসম্পন্ন ৯ টি মেয়েদের দায়িত্ব নেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। থিমে জায়গা দেওয়া হয় তাঁদের। এ বছরও তাঁদের থিমভাবনায় সামাজিকতার বার্তা দিয়ে নজির গড়ল এই ক্লাব। ক্লাবের তরফে চারজন দৃষ্টিহীন এবং ছ’জন মানসিক ভারসাম্যহীন শিশুকে মণ্ডপ ভাবনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের ভাবনাতেই ফুটে উঠছে মণ্ডপের বহিরঙ্গ থেকে অন্দরসজ্জা। এছাড়াও অন্যান্য পুজোগুলিতেও পরিক্রমা করানো হবে এই বিশেষ শিশুদের দিয়ে।