নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ আসমুদ্র হিমাচল। তাঁর অভিনয়ে বিমোহিত সকল প্রজন্ম। আজ তাঁর জন্মদিন, বেঁচে থাকলে ৮৯ বছরে পদার্পণ করতেন তিনি, ১৯৩৫ সালে কলকাতা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মির্জাপুর স্ট্রীটের মোহিত কুমার চট্টোপাধ্যায়-আশালতা চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশে। তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর পিতামহের আমল থেকে বাংলায় বসবাস করছেন। অভিনয়ের মুগ্ধ করেছেন তিনি সকল প্রজন্মকে। টলিউডে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ছবির মাধ্যমে টলিউডে ডেবিউ করেন অভিনেতা। যদিও তাঁর হাতেখড়ি রেডিয়োর ঘোষক হিসেবে। এরপর মঞ্চে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর জার্নি।
১৯৫৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অপুর সংসার ছবিতে শর্মিলা ঠাকুরের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। সেখানে অসাধারণ সাফল্যের পর অভিনেতা সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে পরপর ১৪ টি ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু বাঙালির কাছে তিনি অভিনেতা থেকেও বেশি আবেগ। শুধু অভিনয়েই নিজেকে টিকিয়ে রাখেন নি অভিনেতা, তিনি একাধারে একজন কবি, নাট্যকার, লেখক, পরিচালক ও বাচিকশিল্পীও বটে। আজীবন ধুতি-পাঞ্জাবি পরে আদ্যোপান্ত বাঙালি হিসেবেই জীবন কাটিয়ে গেলেন তিনি। বাংলায় অভিনীত তাঁর চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে অত্যন্ত পরিচিত চরিত্র হল ‘ফেলুদা’।
সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সোনার কেল্লা এবং জয় বাবা ফেলুনাথ ছবিতে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করার পর তিনি বরাবরের মতো বাংলার ফেলুদা হয়ে যান। গোটা বাঙালি সমাজের কাছে তাঁর স্মৃতিগুলি আজও অমলীন। আজ ‘নবান্ন’-তে কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল ছোট্ট শ্রদ্ধানুষ্ঠান। অভিনেতার একটি মস্ত বড় ছবিতে মালা পরিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। সঙ্গে তাঁর ছবির একাধিক গান নিয়ে একটি ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরে ঘোর করোনার সময়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা। টানা ৪০ দিন বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর অবশেষে ১৫ নভেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান অভিনেতা।