আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘ দেড় মাস পর গাজা-ইজরায়েল যুদ্ধে অবশেষে চার দিনের যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধ বিরতি গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনেছে। গত রাতে (২৪ নভেম্বর) নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছে গাজাবাসী। সাত সপ্তাহ ধরে প্রতি রাতে গাজার কোথাও না কোথাও হামলা হয়েছে, প্রাণহানিও ঘটেছে। কিন্তু এ দিন রাতে হামলা, প্রাণহানি, কান্না বন্ধ ছিল।
আলজাজিরার এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ৪৮ দিন পর এক রাতে গাজাবাসী নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছে। ঘুমের মধ্যে ইজরায়েলি বোমার আঘাতে প্রাণ হারানোর ভয় তাদের তাড়া করে ফেরেনি। কেটেছে আতঙ্কহীন রাত।
তবে গাজাবাসীরা মনে করছে, এটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বিরতি নয়। সাময়িক বিরতির পর আবার ইজরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালাবে। গাজায় প্রায় ১৭ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ উদবাস্তুর মতো জীবন কাটাচ্ছে। জীবন বাঁচাতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছে তারা। কেউই নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না।
ইজরায়েলি বাহিনী উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে একটা সামরিক সীমা টেনে রেখেছে। সেটা পেরিয়ে কাউকে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল কয়েকজন প্যালেস্তাইনি জোর করে উত্তর গাজায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ইজরায়েলি বাহিনীর হাতে তাঁদের প্রাণ যায়। ক্ষোভে ফুঁসছে গাজাবাসীরা। তাদের প্রশ্ন, নিরাপদে বাড়ি ফেরার সুযোগ দেওয়ার শর্তটি কেন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্ত করা হয়নি? এ জন্য তারা হতাশ।
এদিকে, যুদ্ধ বিরতির চুক্তি অনুসারে প্রথম দিনে কারাগার থেকে ৩৯ জন প্যালেস্তাইনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইজরায়েল। বন্দিদের মধ্যে ২৪ জন নারী ও ১৫ জন তরুণ। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের মুক্তি দেয়া হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারাগার থেকে প্যালেস্তাইনিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীও। এক এক্স পোস্টে তারা বলেছেন, ‘প্যালেস্তাইনি বন্দিদের ইজরায়েলি বাহিনী এবং শিন বেট এজেন্টরা নিয়ে যাচ্ছে। ইজরায়েলি হাসপাতালে প্যালেস্তাইনিরা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের সঙ্গে থাকবেন।’
অন্যদিকে, স্থানীয় সময় বিকাল ৪টেয় ১৩ জন ইজরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এছাড়াও ১২ জন থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে তারা।