আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভয়াবহ বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের সামনে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। দ্বীপরাষ্ট্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি হয়েছে কার্ফু।
মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কা পুলিশের আই জি সিডি বিক্রমরত্নে জানিয়েছেন, রাজধানী কলম্বো এবং কলম্বো সংলগ্ন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত কার্ফু বলবৎ থাকবে।
শ্রীলঙ্কায় আচমকাই অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। দেশের মুদ্রাভাণ্ডারে সঞ্চিত তহবিল প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। দ্বীপরাষ্ট্রকে বাঁচাতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। বিভিন্ন দেশের কাছে চেয়েছে আর্থিক সাহায্য। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের কাছেও তারা সাহায্য করা আর্জি জানিয়েছে। জ্বালানি সংকটে ভুগতে থাকা দ্বীপরাষ্ট্রকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
ডিজেল শেষ হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা সরকার গণপরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যুতের সংকট দেখা দেওয়া সরকার জানিয়ে দিয়েছে, সন্ধ্যার পর রাস্তার আলো কয়েকদিন জ্বলবে না। পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে, তা কার্যত মেনে নিয়েছে সরকার। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কয়েক হাজার মানুষ প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দাবি তোলে তাঁর পদত্যাগের। নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করে।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ২৬ বছরের অজিত পেরেরা জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ী প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। আমাদের একটাই দাবি-ওনার ইস্তফা।এই আন্দোলন সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত। আন্দোলনের পিছনে কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থন নেই। প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। ওনার স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেওয়া উচিত।’
একই বক্তব্য ২১ বছরের আজিথ পেরেরার। এই তরুণ জানিয়েছে, ‘পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক যে আমরা দুবেলা খেতে পারছি না। আমি তো বটেই, আমার পরিবারের কেউ এমন ভয়াবহ সঙ্কট দেখেনি। প্রেসিডেন্টের এখন একটাই করণীয়-ইস্তফা। আমরা ওনার ইস্তফা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না। ‘
আরও পড়ুন জ্বলবে না আলো, রাস্তা থাকবে অন্ধকার, ঘোষণা শ্রীলঙ্কা সরকারের