আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সামনেই নিউ ইয়ার। শুরু হবে এক নতুন বছরের। আর জেলে বসেই দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান উপহার পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই। নতুন বছর উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন যাঁদের ক্ষমা করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জিউন হাই। আর ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় ২০১৭ সালে ইমপিচমেন্টে প্রেসিডেন্ট পদ খুইয়েছিলেন। ৬৯ বছর বয়সী রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিউন হাইকে ২০১৮ সালে ২২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।
আন্তর্জাতি সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ জানিয়েছে, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন সামরিক শাসক পার্ক চুং-হির মেয়ে পার্ক জিউন হাই ২০১৩ সালে দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু বছর তিনেক যেতে না যেতেই তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসে। জিউন হাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বান্ধবী চই সুন সিলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্যামসাঙ ও লোটের মত সংস্থাকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে ৭৭.৪ বিলিয়ন ইউয়ান ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন এবং ওই অর্থে চইয়ের নামে দুটি দাতব্য সংস্থা গড়ে তুলেছেন। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে সংসদ ও রাজপথে পার্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। ডিসেম্বরে সংসদে তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনা হয় এবং ওই প্রস্তাব পাশ হয়। ২০১৭ সালে সাংবিধানিক আদালত অভিশংসনের সিদ্ধান্তে শিলমোহর দেয়। ফলে ক্ষমতাচ্যূত হন পার্ক।’
পরের বছর দক্ষিণ কোরিয়ার এক আদালত প্রভাব খাটিয়ে অর্থ আদায় সহ একাধিক অপরাধে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে ২২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। তার পর থেকেই জেলে রয়েছেন পার্ক। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশ কয়েকবার অবশ্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পূর্বসূরিকে কোনও কারণেই ক্ষমা প্রদর্শন করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্টকে।