নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দেখতে দেখতে মাস পেরতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। আর মাত দুদিন, তারপরেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ সামরিক অভিযানের নামে ইউক্রেনে যে আগ্রাসন শুরু করেছে রাশিয়া, তার এক মাস পূর্তি হবে। ইতিমধ্যেই রাশিয়ারফ এই পদক্ষেপ নিয়ে গোটা বিশ্বে সমালোচনার ঝড় উঠলেও ভারত কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে যে ভোটাভুটির আয়োজন করেছিল জাতিসংঘ তাতেও অংশ নেয়নি ভারত। এর জেরে রাশিয়াকে কেন্দ্র করে ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে যে ক্ষুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোমবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের করা মন্তব্যে তা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে।
সোমবার ওয়াশিংটনে এক বাণিজ্য সভায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থানের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, এই মুহূর্তে মস্কোকে নিয়ে ভারতের পদক্ষেপ যথেষ্ট নড়বড়ে এবং প্রশ্নমূলক। তাঁর কথায় ‘কোয়াড সদস্যদের মধ্যে ভারতের অবস্থান একমাত্র ব্যতিক্রমী। এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে ভারত দোনামোনা করছে, তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়েছে।’
এই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে চলতি মাসে হওয়া কোয়াড কমিটির বৈঠকের পর থেকে। ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে রাশিয়া- ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পরে চলতি মাসের প্রথমেই কোয়াড কমিটির সদস্য তথা ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান এই চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে খুব স্বাভাবিকভাবেই ওঠে ইউক্রেন প্রসঙ্গ। সূত্রের খবর, বৈঠকে ইউক্রেন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের রাষ্ট্রপ্রধান আমেরিকার তালে তাল মিলিয়ে রাশিয়ার কড়া সমালোচনা করলেও সেখানেও ভারতকে নিরপেক্ষই থাকতে দেখা গিয়েছে। উল্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশ তথা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানকে মুখোমুখি বৈঠকে বসে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দেন। এই বৈঠকের পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা মেনে অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান রাশিয়ার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে ওই দেশের সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক কাটছাঁট করেন। কিন্তু সেখানেও ভারত ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক খারাপ করা তো দূরের কথা ভারত উল্টে রাশিয়ার থেকেই অপরিশোধিত তেল কিনতে চলেছে বলে খবর। এর জেরে আরও ক্ষুদ্ধ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভারতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে হোয়াইট হাউস। কিন্তু তাতে ভারতের অন্তর্বর্তী কোনও বিষয়ে মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক।