নিজস্ব প্রতিনিধি: যখন বাংলার বুকে টেলিভিশনের কোনও তারকাই বিজেপি করার নাম মুখে নিত না, তখনই তিনি নাম লিখিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। শুধু নাম লেখানোই নয়, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীও হয়েছিলেন। গেরুয়া শিবিরের তরফে তাঁকে বঙ্গ বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়কের পদও দেওয়া হয়েছিল। তবুও গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির আর সুর তাল ছন্দ মিলছিল না। দলের কোনও অনুষ্ঠানেই তাঁকে আর সেভাবে দেখা যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজেই জানিয়ে দিলেন তিনি আর বিজেপিতে থাকছেন না। কার্যত একরাশ ক্ষোভ নিয়েই বিজেপি ছাড়ছেন তিনি, মানে টলি অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন সুমনবাবু জানিয়েছেন, ‘২০১২ সালে যখন কেউ বিজেপি করত না, তখন দলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দল বড় হয়েছে, তাই আমাদের মতো মানুষের আর গুরুত্ব নেই। তাই কিছুটা বিরক্তি নিয়েই দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তবে এখনই অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছি না। আপাতত নিজের কাজ নিয়েই থাকতে চাই। তার পর অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেব কিনা, তা নিয়ে ভাবব।’ প্রসঙ্গত, বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীদের মধ্যে যাঁরা মোদি জমানারও আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়ক ছিলেন। সেই পদে থাকলেও, দলে তাঁর মতামত গুরুত্ব পাচ্ছিল না বলেই ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছিলেন। শেষে এদিন বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্নই করে দিলেন তিনি।
কয়েকদিন আগেই বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে পরিবর্তন ঘটেছে। দিলীপ ঘোষের জায়গায় এসেছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি দায়িত্ব নিয়েই কার্যত হাতজোড় করে বিজেপির নেতাকর্মীদের কাছে অনুরোধ রেখেছিলেন যাতে কেউ দল ছেড়ে না যান। প্রয়োজনে সমস্যা থাকলে দলের সঙ্গে কথা বলতেও বলেছিলেন। কিন্তু এদিন সুমন জানান, তিনি তাঁর দল ছাড়ার কথা রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে জানাননি। এর কারন হিসাবে তিনি বলেন, ‘উনি খুব ভাল ও আমার কাছের মানুষ। আমি তাঁকে কিছু জানাইনি। তবে দলে থেকে যোগ্য সম্মান না পাওয়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছি। ২০১৬ সালে বিধানসভার ভোটে ইংরেজবাজার থেকে আমাকে প্রার্থী করা হয়েছিল। এবারে সেটাও করা হয়নি। টালিগঞ্জের একঝাঁক তারকা কিন্তু এবারে বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি কী এতটাই অযোগ্য যে প্রার্থী হিসেবে তা বিবেচিতও হয় না।’