নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED বা Enforcement Directorate’র হাতে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chattopadhay)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এখনও তাঁর কোনও সম্পত্তি বা তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের কোনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেনি। কেননা সেখানে তাঁরা কোনও গরমিল খুঁজে পাননি। কিন্তু পার্থ’র বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়(Arpita Mukhopadhay) থুড়ি ‘অপা’র বাড়ি থেকে যেমন কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছে তেমনি তাঁর বেশ কিছু দামী সম্পত্তিও বার হয়েছে। সেই অর্পিতাকে নিয়েই আবার সিনেমা বানিয়েছিলেন সদ্য সদ্য ED’র হাতে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের(Jyotipriya Mallik) অতি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান(Bakibur Rahaman)। এই বাকিবুরেরই প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি এখন খুঁজে পেয়েছেন ED’র আধিকারিকেরা। আর সেই সূত্রেই উঠেছে প্রশ্ন, অর্পিতা কী তাহলে পার্থ’র পাশাপাশি বালু ও বাকিবুরেরও ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন? পার্থ’র পাশাপাশি এই দুইজনকেও কী সম্পর্কের বাঁধনে বেঁধেছিলেন অর্পিতা?
জানা গিয়েছে, অর্পিতাকে নায়িকা করে বাকিবুর ‘ম্যানগ্রোভ’ নামে একটি বাংলা সিনেমা বানিয়েছিলেন। সেই সিনেমা বানানো হয়েছিল বছর ১০ আগে। এখন প্রশ্ন উঠেছে রেশন আর নিয়োগ দুর্নীতির টাকাতেই কী সেই সিনেমা বানানো হয়েছিল? সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সিনেমার বিষয়ে জেলবন্দী অর্পিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন ED’র আধিকারিকেরা। এর আগেও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিকবার টলিউড যোগ সামনে এসেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, দুর্নীতির টাকায় তৈরি হয়েছে একের পর এক বাংলা ছবি। আর বাকিবুরের ছবির সঙ্গে স্বয়ং অর্পিতার যুক্ত থাকায় সেই জল্পনা কার্যত আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। এমনটাও জানা যাচ্ছে, শুধু অর্পিতা নন, ওই সিনেমায় একট আইটেম ডান্স করেছিলেন মুম্বইয়ের এক নামজাদা অভিনেত্রী। এছাড়াও ছিলেন টলি অভিনেতা নাইজেল আকারা, দোলন রায় প্রমুখরা। তাজপুর, দীঘার সমুদ্র সৈকতে ছবির শ্যুটিং হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এই ছায়াছবিতে বিরাট অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এর মধ্যে দুর্নীতির টাকা আছে কি না, সেটাই এখন খুঁজে দেখতে চান ED’র আধিকারিকেরা।
তবে এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে অর্পিতার চরিত্র। ঠিক কতজনকে নিজের সঙ্গে সম্পর্কে বেঁধেছিলেন এই মক্ষীরানী? পার্থ’র কাছে তিনি ছিলেন প্রায় অবিবাহিত স্ত্রী। সেই একই সম্পর্কে কী অর্পিতার সঙ্গে জড়িয়েছিলেন বালু আর বাকিবুর? ৩জনকেই কী বিছানায় খুশি করতেন অর্পিতা? প্রশ্ন নেটিজেনদের। যদি এই প্রশ্ন সত্যি হয় তাহলে মেনে নিতেই হবে এই মক্ষীরানীর ক্ষমতা আছে। রাজ্যের ২ মন্ত্রী ও এক ব্যবসায়ীকে যেভাবে সম্পর্কের বাঁধনে বেঁধেছিলেন এই মক্ষীরানী তা রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই, রাজ্যের জনমানসেও বেশ ছাপ ফেলে যাবে। মজার কথা অর্পিতা কিন্তু এদের কাউকেই বিয়ে করেননি। যদিও তিনি পার্থ’র নাগাল থেকে বেড়িয়ে একবার এক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে মুম্বই পালিয়েছিলেন টাকাপয়সা গয়না নিয়ে। কিন্তু ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটিয়ে পার্থ তাঁকে কলকাতায় ফেরত আনেন। এখন সেই অর্পিতা নতুন করে রাজ্যবাসীর কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন।