নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বছরের শেষ দিকে মূলত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে কলকাতা পুলিশ(Kolkata Police) শহরের বেশ কিছু বারে হানা দিয়ে সেখান থেকে হুক্কার যাবতীয় সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি বারগুলিও বন্ধ করে দেয়। কলকাতা শহরে পার্কস্ট্রিট থানা, শেক্সপিয়ার সরণী থানা এবং তালতলা থানা এলাকায় ওই অভিযান করা হয়েছিল। পরে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটও(Bidhannagore Police Commissionarate) সল্টলেকের ৪টি থানা এলাকায় এইস একই অভিযনা চালয় ও বেশ কিছু বার বন্ধ করে দেয়। সেই সব হুক্কা বার মালিকদের একাংশ কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) এই মর্মে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানিতেই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কাছ থেকে হুক্কা বার(Hukka Bar) বন্ধের সিদ্ধান্তে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে।
আরও পড়ুন OBC’দের জন্য মমতার বাংলায় এবার নয়া প্রকল্প ‘মেধাশ্রী’
উল্লেখ্য গত বছরের ডিসেম্বর মাস্বের গোড়ায় কলকাতা পুরনিগম এলাকার সব হুক্কা বার বন্ধ করার কথা জানিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি সেই সময়ে জানিয়েছিলেন, শহরের সব রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকেই হুক্কা বার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুরোধে কাজ না হলে, কিংবা গোপনে হুক্কা বার চালানো হলে পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে বলেও জানান তিনি। নিয়ম অমান্য করলে রেস্তরাঁগুলির লাইসেন্স নবীকরণ করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মেয়র। সেই মতো পুলিশ পদক্ষেপ করা শুরু করে ডিসেম্বর মাস থেকেই। এর পর বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত হুক্কা বার বন্ধের জন্য পুলিশ কমিশনারেটকে চিঠি দিয়ে সক্রিয় হওয়ার ‘অনুরোধ’ জানান। সেই দুই পুরনিগমের সিদ্ধান্তকেই কার্যত এরপরে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন বেশ কিছু হুক্কা-বার মালিকেরা। তাঁদের বক্তব্য, পুরনিগমের আইনে হুক্কা বার বন্ধের বিষয়ে বলা নেই। ২০০৩ সালে ‘সেন্ট্রাল টোব্যাকো আইন’ মেনে এই বারগুলি চালানো হয়। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অনেক রায় রয়েছে। সে রায়গুলি অগ্রাহ্য করে পুরনিগম কী ভাবে হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
আরও পড়ুন শুক্র থেকে সোম, শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় বাতিল ২৮টি লোকাল
হুক্কা বারগুলির মালিকদের আরও দাবি, হুক্কায় ভেষজ তামাক ব্যবহার করা হচ্ছে। দুই পুরনিগম সিদ্ধান্ত বদল না করলে হাজারের বেশি রেস্তরাঁর ব্যবসা ধাক্কা খাবে। এর পরই কিসের ভিত্তিতে হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা নিয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চাইল আদালত। সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই পুরনিগমের দেওয়া নোটিসে কোথাও বলা হয়নি কেন এই সব হুক্কা-বার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বা তা দিতে হবে। কোনও কারণ না দেখিয়ে কীভাবেই বা তা বন্ধ করে দিতে বলা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায়। এখন দেখার বিষয় দুই শহরের দুই পুলিশ এখন আদালতে হুক্কা-বার বন্ধের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোন কারণ তুলে ধরে।