নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী অগস্ট মাসে নয়া দিল্লির রাজপথে ইন্ডিয়া গেটের ক্যানপিতে গ্রানাইটের তৈরি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসবে। তার আগে গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই জায়গাতেই নেতাজির একটি হলোগ্রাম মূর্তির উদ্বোধন করেছেন। গ্রানাইটের তৈরি মূর্তিটির নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে এই হলোগ্রাম মূর্তিটি সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এখন সেই হলোগ্রাম মূর্তির আদল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন নেতাজির পরিবারেরই সদস্য চন্দ্র বসু। তাঁর অভিমত, নেতাজির স্যালুট করার ভঙ্গি তাঁর মতো ব্যক্তিত্ববান দেশনায়কের সঙ্গে খাপ খায়নি। কারণ, দিল্লিতে কুচকাওয়াজ হয় মাত্র এক দিন। বছরের বাকি দিনগুলি নেতাজির মূর্তির সামনের দিকের রাস্তা ফাঁকাই থাকবে। তাই সারা বছর স্যালুটের ভঙ্গিমায় তাঁর মতো ব্যক্তিত্বের মূর্তি স্থাপন সঠিক নয়। বরং, সংসদে নেতাজি যে মূর্তি রয়েছে সেই রকমই একটি মূর্তি গড়ে তা রাজপথে বসানো হোক। উল্লেখ্য ইতিমধ্যে নেতাজির মূর্তির ভঙ্গিমা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেছেন গীতিকার জাভেদ আখতারও। আর তার পরে পরেই প্রধানমন্ত্রীকে এই একই বিষয় নিয়ে চিঠি চিঠি দিলেন চন্দ্র বসুও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেওয়ার প্রসঙ্গে এদিন চন্দ্র বসু জানিয়েছেন, ‘আমি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের মতামত নেওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। যে হেতু এখনও মূর্তি তৈরি করে বসানোর জন্য অনেকটা সময় বাকি আছে, তাই আমরা আমাদের মতো করে প্রস্তাব দিয়েছি। তাছাড়া নেতাজি-কন্যা অনিতা বসু পাফও মূর্তি নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা পারিবারিক স্তরে জানিয়েছেন। ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির ওই মূর্তি গড়বেন ওড়িশার অদ্বৈত গদানায়ক। তিনি ‘ন্যাশনাল গ্যালারি অব মর্ডান আর্ট’-এর মহানির্দেশক ভাস্কর। বর্তমানে তিনি দিল্লিতেই আছেন। ফোনে তাঁর সঙ্গেও কথা হয়েছে। অদ্বৈত বলেছে এই বিষয়ে কলকাতায় এসে য়ামাদের সঙ্গে কথা বল্কে যাবে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে এই সবই জানিয়েছি।’
একই সঙ্গে চন্দ্র বসু এদিন নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কেন্দ্র সরকারের গঠিত ৮৫ জনের কমিটির বৈঠক না হওয়ার প্রসঙ্গটিও তুলেছেন। নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী দেশজুড়ে কীভাবে পালিত হবে সেটা ঠিক করতেই কেন্দ্র সরকার ওই কমিটি গড়ে দেয়। তাতে বসু পরিবারের চার সদস্যও স্থান পান। সেই কমিটির চেয়ারম্যান আবার স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গত এক বছরে ওই কমিটির একটি বৈঠকও হয়নি। কিন্তু দিল্লির রাজপথে নেতাজির মূর্তিটি বসানোর আগে ওই কমিটির একটি অন্তত বৈঠক হোক, এমনটাই চাইছেন বসু পরিবারের ওই চার সদস্য। সেই বৈঠকেই তাঁরা মূর্তির ভঙ্গিমা নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা সবার সামনে তুলে ধরতে চান। যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কমিটির বৈঠকের কোনও সম্ভাবনাই নেই।