নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশি দেরী করতে চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাই দ্রুত সেরে ফেলতে চান রাজ্য মন্ত্রিসভার(State Ministry) রদবদল। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সোমবারই রাজ্য মন্ত্রিসভায় প্রয়োজনীয় রদবদল সেরে ফেলতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই রদবদলের পাশাপাশি তৃণমূলের(TMC) সাংগঠনিক স্তরেও কিছু রদবদল ঘটবে বলে শাসক দল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই দুই রদবদলের কাজ সেরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি(New Delhi) যেতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। কেননা আগামী ৭ অগস্ট দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে। সেখানে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যোগ দেবেন। সেই বৈঠকে যোগ দিতে পারেন মমতাও। তবে তাঁর দিল্লি যাত্রার সফরসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে দিল্লি গেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয় কিনা সেটা দেখার জন্য অনেকেই আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকবেন।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর দফতর রদবদল করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। রদবদলের জেরে যে বা যাঁরা মন্ত্রিসভায় আসছেন, তাঁদের নামের একটি তালিকা শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌঁছে গিয়েছে রাজভবনে। এবারের রদবদলে যে একাধিক নতুন মুখ আসছেন সে নিয়ে কোনও সম্ভাবনা নেই। সেই তালিকায় বাবুল সুপ্রিয়, মনীষ গুপ্ত, নির্মল ঘোষ, তাপস রায় থাকলেও থাকতে পারেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনাচক্রে আগামী সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকের আগেই নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন মন্ত্রীরা হাজির থাকলেও থাকতে পারেন। সেখানেই ঠিক হয়ে যেতে পারে নতুন মন্ত্রীরা কে কোন দফতর পাবেন। একই সঙ্গে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার রাজ্যের শাসক দলে ‘মহাসচিব’ পদটিই তুলে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে রাজ্য কমিটির পদাধিকারীদের আরও দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হবে। পার্টি অফিস থেকেই দল পরিচালিত হবে, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কোনও অবস্থায় বেফাঁস মন্তব্য করা যাবে না, এমনটাও দলের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এটাও জানা গিয়েছে, ২৯ আগস্টের পর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংগঠনেও রদবদল করা হচ্ছে।
এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কোটি তাকা উদ্ধার হওয়ার ঘটনার পরে এই প্রথম দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। এবার তাঁর দিল্লি সফর একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। নীতি আয়োগের বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতার আলাদাভাবে বৈঠকের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। স্বভাবতই মমতার এই সফরের দিকে নজর থাকবে গোটা দেশের। গ্রামোন্নয়ন সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, বাংলার মানুষের প্রতি কেন্দ্রের দুয়োরানি সুলভ আচরণ নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন। এই আবর্তে আগামী ৭ অগস্ট নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা যোগ দেন কিনা, যোগ দিলেও এই সব বিষয়ে সুর চড়ান কিনা সেটাই দেখতে চাইছেন দেশের মানুষ। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা যদি দিল্লি যান তাহলে নীতি আয়োগের বৈঠকের ৩ দিন আগেই যাবেন। সম্ভাবনায় থাকছে সংসদ ভবনে মমতার উপস্থিতি। পাশাপাশি দেশের বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে কোনও বৈঠক তিনি করেন কিনা সেটাও দেখার। নীতি আয়োগের বৈঠকের পরের দিন সম্ভবত কলকাতায় ফিরবেন মমতা। তবে, তাঁর দিল্লি সফরের সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।