নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির(School Teachers Recruitment Scam) ঘটনায় গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) স্পেশ্যাল ডিভিশন বেঞ্চ এক চাঞ্চল্যকর রায়(Case Verdict) দিয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের(SSC) ৪টি প্যানেলের মাধ্যমে মোট ২৫ হাজার ৭৫৪ জনের চাকরি হয়েছিল। সেই প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রে ১৭ রকমের পথে দুর্নীতি হয়েছিল। সোমবারের রায়ে বিচারপতিরা জানিয়েছেন – অযোগ্যদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেই গোটা নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হয়েছে! তা তাঁরা করতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন। আর সেই প্যানেল বাতিলের জেরে সোমা দাস ব্যাতীত বাকি ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি খারিজ করা হচ্ছে। এই চাকরিহারাদের(Job Loosers) মধ্যে আছেন নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং Group-C ও Group-D’র কর্মীরা। আদালত জানিয়েছে, এই চাকরিহারাদের মধ্যে যারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। কিন্তু কত টাকা ফেরাতে হবে?
আদালতের রায় অনুযায়ী, ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি খারিজ হলেও সবাইকে টাকা ফেরত দিতে হবে না। কেবলমাত্র যারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। অনুমান করা হচ্ছে নূন্যতম প্রায় ৫ হাজার জনকে এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার জনকে সেই টাকা ফেরাতে হবে। আদালত জানিয়েই দিয়েছে, টাকা ফেরানোর ক্ষেত্রে বেতনের সঙ্গে বাৎসরিক ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতেও হবে। আর সেটা ফেরাতে হবে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে। । কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ কত হবে তা অনেকেরই জানা নেই। দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক স্তরের একজন শিক্ষককে গড়ে ২২ লক্ষ এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের টিচারদের গড়ে ২৮ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা ফেরাতে হবে। কিন্তু মাত্র ৪ সপ্তাহের মধ্যে কীভাবে এত বড় অঙ্কের টাকা তাঁরা ফেরত দেবেন তার রাস্তা আদালত দেখিয়ে দেয়নি। কোনও ব্যাঙ্ক এখন এই চাকরিহারাদের ঋণ বা Loan দিতে চাইবে না। বাড়ি-ঘর জমিজমা বিক্রি করেও সেই টাকা উঠবে কিনা সন্দেহ। আর যদি তাঁরা সেই টাকা ফেরত দিতে না পারেন তাহলে কী হবে! সেকথাও কিন্তু বলে দেয়নি আদালত। দেখার বিষয় এই সব ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট কী পদক্ষেপ করে।