নিজস্ব প্রতিনিধি: ভবানীপুরের ব্যবসায়ী খুনে নিহতর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই খুনের ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।দুই অভিযুক্তকে গ্ৰফতার করে বুধবার দুপুরে নিয়ে আসা হয়েছে বালিগঞ্জ থানায়(Ballyganj P.S.)। পুলিশ কমিশনার(CP) বিনীত কুমার গোয়েল বুধবার বিকেলে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে জানান, গোটা ঘটনাটি পরিকল্পনা মাফিক ঘটনা হয়েছে। তার দাবি, এটা প্রি- প্ল্যান মার্ডার । পুলিশ কমিশনার জানান, এই খুনের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত দুজন ছিল বলে জানতে পেরেছি। বাকি আর কেউ ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।
এই খুন কিভাবে হয়েছে, তা জানতে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং ফরেনসিক তদন্তের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। পুলিশ তদন্তে আরো জানতে পেরেছে, এই খুনের ঘটনা ঘটাবার জন্য দুটি ব্যাট এবং উইকেট আগের থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে গিয়ে এদিন বলেন, এই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে। নিহত ব্যবসায়ির পুত্র আইসিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তিনি বলেন,তার জন্যই নিমতা থানা(Nimta P.S.) থেকে এই কেসটি লালবাজারের হোমিসাইড শাখাকে দেওয়া হয়েছে।এখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যেহেতু মৃতের স্ত্রী একটি মিসিং ডায়েরি দায়ের করেছেন । তাই অভিযুক্তদের বালিগঞ্জ থানায় এনে তদন্ত পক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ধার নেওয়া টাকা ফেরত না দেওয়া নিয়ে বচসা তার জেরে খুন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। লালবাজারের গোয়েন্দা শাখাও উপস্থিত হয়েছে। বালিগঞ্জ থানা, লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা ও অপরাধ দমন শাখার(ARS) অফিসাররা মিলিত ভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্যবসার জন্য ব্যবসায়ী ভব্য লাখানীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন ব্যবসায়ী অনির্বাণ গুপ্তা। টাকা নেওয়ার পর বহুবার তার কাছে টাকা চাওয়া হলেও সেই টাকা দিতে রাজি হননি অনির্বাণ গুপ্ত। অবশেষে ১০ মার্চ টাকা দেওয়ার জন্যই ভব্য লাখানীকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অনির্বাণ গুপ্তা এমনটাই সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, উল্লেখ করা যেতে পারে,ভবানীপুরের এক ব্যবসায়ীকে নিমতা থানা এলাকায় খুন করা হয়। ব্যবসায়ীর নাম ভব্য লাখানী। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১০ মার্চ এই ভব্য লাখানী ব্যবসায়ীর পার্টনার অনির্বাণ গুপ্ত তাকে ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ডাকে তার নিমতার বাড়িতে। আলোচনার সময় বচসা সৃষ্টি হয় এবং তাখনই তাকে মাথায় উইকেট(Wicket) দিয়ে মেরে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। দেহ লোপাট এর জন্য ওই ব্যবসায়ির দেহ প্লাস্টিকের মুড়ে অনির্বাণ গুপ্তার বাড়ির যে জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে সেই ট্যাংকেই রাখা হয়।
লুকানোর জন্য তার চারিপাশেই পাঁচিল তৈরি করার কাজ তারা তড়িঘড়ি সেদিন রাতেই শুরু করে। এবং সেই সময়ই রাতে পাচিল দিতে দেখে ট্যাংকের চারিদিকে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা, নিমতা থানায় খবরটি দেয়। যেহেতু এই ব্যবসায়ীর মিসিং ডায়েরি করা হয়েছিল বালিগঞ্জ থানায় তাই নিমতা থানা খবর পাওয়ার পর বালিগঞ্জ থানায় খবর দেয় সেখান থেকে দুই থানা মিলিত ভাবে বিষয়টির তদন্তে নামে। পাশাপাশি অনির্বাণ গুপ্তা সহ উত্তর কলকাতাতে তারই একজন ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সুমন দাসকে গ্রেপ্তার করে এই ঘটনায়। নোয়াপাড়ার ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বেশ কিছু রক্তাক্ত জামা কাপড় ইতি মধ্যেই উদ্ধার করেছেন পুলিশ। অবশেষে উদ্ধার হয় মৃতদেহ।