নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে জন্ম নেওয়া নিম্নচাপ গত শনিবারই পা রেখেছে স্থলভাগে। সেদিন সে উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় অতি ভারী বর্ষণের সুত্রপাত ঘটিয়েছিল। সেই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া(Howrah District), হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায়। রবিবার সেই নিম্নচাপ সরতে শুরু করে রাজ্যের পশ্চিম দিকে। তার জেরে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর সহ হাওড়া, কলকাতা ও হুগলি(Hooghly District) জেলায় মাঝারি মাপের বৃষ্টি হয়। কিন্তু ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয় ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বুকে। সোমবার থেকে কিন্তু ধীর গতিতে এগোচ্ছে নিম্নচাপ। তার ফলে আগামী বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে এবং ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। তার মাঝেই সোমবার সকালে ১ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে Damodar Valley Corporation বা DVC। সেই কারণে হাওড়া ও হুগলি এই দুই জেলায় কমলা সতর্কতা(Orange Alert) জারি করা হয়েছে।
সোমবার সকালে DVC’র মাইথন জলাধার(Maithon Barrage) থেকে ৪৫ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার(Panchet Barrage) থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। মাইথন জলাধার রয়েছে দামোদরের(Damodar River) উপনদী বরাকরের(Barakar River) ওপর। অন্যদিকে পাঞ্চেত জলাধার গড়ে উঠাছে দামোদর নদের ওপর। এই দুই নদীর জলাধার থেকে ছাড়া মোট ১ লক্ষ কিউসেক জল এদিন রাত ৯টার মধ্যেই দুর্গাপুর জলাধারে(Durgapur Barrage) এসে পৌঁছাবে। আর তার পর সেখান থেকেও জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। DVC জানিয়ে দিয়েছে দুর্গাপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া হলে তা আগামিকাল সকাল ১০টার মধ্যে বর্ধমান শহর লাগোয়া সদরঘাট এলাকায় চলে আসবে। হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমায়(Aarambag Sub Division) সেই জল পৌঁছাবে বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ এবং বৃহস্পতিবার মধ্যরাত্রি ১টা নাগাদ সেই জল পৌঁছে যাবে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমা এলাকায়। অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকেই জলের নীচে যেতে চলেছে হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার খুব করেও ৬টি ব্লক। এগুলি হল – গোঘাট ১, গোঘাট ২, খানাকুল ১, খানাকুল ২, আরামবাগ ও পুরশুড়া। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জলের তলায় যাবে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার(Uluberia Sub Division) উদয়নারায়ণপুর ব্লক, আমতা ১ ও ২ ব্লক।
DVC সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু নিম্নচাপ খুব ধীর গতিতে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরছে তাই আগামী বুধবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা থাকছে ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায়। সেই সূত্রে আগামী ২ থেকে ৩ দিন আরও আড়াই থেকে ৩ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হতে পারে DVC’র জলাধারগুলি থেকে। যার অর্থ পুজোর মুখে বানভাসি হতে চলেছে হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া এবং হুগলি জেলার আরাম্বাগ মহকুমার কয়েক লক্ষ মানুষ। যদিও কংসাবতী ও শিলাবতী থেকে সেভাবে জল না ছাড়ায় মেদিনীপুরের মাটিতে এখনই বন্যার কোনও আশঙ্কা নেই বলেই জানা গিয়েছে।