নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁকে নিয়ে অনেকবার জল্পনা ছড়িয়েছে। এবারেও ছড়ালো। কেননা তিনি বৈঠকে গরহাজির থেকে গেলেন। আর সেটাও লোকসভা নির্বাচনের(General Election 2024) আগে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) অন্দরে। কলকাতায়(Kolkata) এসেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। বাংলা ছাড়াও ওড়িশা ও তেলঙ্গানার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন থাকায় অনেক দিন তিনি রাজ্যে বিশেষ সময় দিতে পারেননি। সুনীল ছাড়াও এসেছেন রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে। এসেছেন দলের রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক আশা লাকড়াও। কলকাতায় আছেন বিজেপির এরাজ্যের আরও এক সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যও। তাঁদের সকলের উপস্থিতিতে এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বিজেপির সল্টলেকের অফিসে ছিল জরুরি সাংগঠনির বৈঠক। সেখানে বাংলা থেকে নির্বাচিত দলের সব সাংসদকে আসতে বলা হয়েছিল। সবাই এসেওছিলেন, ব্যতিক্রম শুধু তিনি। আসেননি বৈঠকে। স্বাভাবিক ভাবেই আবারও জল্পনা ছড়িয়েছে তাঁকে নিয়ে, মানে হুগলি থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়(Locket Chatterjee)।
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদানীংকালে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে গরহাজির থেকেছেন লকেট।কেন তিনি বৈঠকে থাকছেন না তা জানিয়ে বলেছেন, সংসদে অধিবেশন চলার জন্যই তিনি আসতে পারছেন না। নেতৃত্ব সেটা জানে। কিন্তু এখানেই উঠেছে প্রশ্ন। সুকান্ত সাংসদ হয়েও কলকাতায় এসেছেন। রাজ্যের আর এক সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো পুরুলিয়ার সাংসদ। তিনিও দিল্লি থেকে এসেছেন কলকাতায়। তাহলে লকেট নেই কেন? তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, হুগলির সাংসদ, রাজ্যের নেতা হওয়ার পাশাপাশি লকেট খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান। সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট মঙ্গলবারই সংসদে পেশ করার কথা লকেটের। সেই কারণেই দিল্লি ছেড়ে কলকাতায় আসতে পারেননি।
রাজ্য বিজেপির অনেক নেতাই অবশ্য এই কারণকে ‘ছেঁদো যুক্তি’ বলছেন। তাঁদের বক্তব্য, এমন কোন রিপোর্ট জমা দিতে হবে যে, তা এক দিন আগে-পরে করা যায় না। তাঁদের বক্তব্য, লকেট ইদানীং রাজ্যের সংগঠনে বিশেষ নজর দিতেই চান না। মাঝেমধ্যে রাজ্যের কোথাও কোথাও গেলেও বেশির ভাগ সময়টাই দিল্লিতে কাটান। এমনকি নিজের লোকসভা আসন হুগলিতেও বিশেষ ভাবে সময় দেন না। রাজ্যের সাংগঠনিক বৈঠকে প্রায়ই গরহাজির থাকেন। উপস্থিত থাকলেও আলোচনায় বিশেষ অংশ নিতেও দেখা যায় না।
লকেটকে নিয়ে অবশ্য রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা নতুন কিছু নয়। লকেট তৃণমূলে(TMC) যোগ দিতে পারেন বলে অনেক জল্পনা রয়েছে। হুগলি ছেড়ে অন্য আসনে লোকসভায় প্রার্থী হতে চান বলেও জল্পনা আছে। তবে প্রতি বারই এই সব প্রচারকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন লকেট। তবে গত ২৯ নভেম্বর কলকাতায় অমিত শাহের সভা আয়োজনেও লকেটের বিশেষ ভূমিকা দেখা যায়নি। মঞ্চে ছিলেন, বক্তৃতাও করেছেন। কিন্তু ওই সভা সফল করার ক্ষেত্রে তাঁর ওপরে দায়িত্ব ছিল শুধু দলেরই সাংসদ, বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো। তবে লকেটের জাতীয় রাজনীতির প্রতি আগ্রহ বেশি বলে যাঁরা দাবি করেন সেই শিবিরের বক্তব্য অন্য। জোড়াফুল কিন্তু মাঝে মধ্যেই চমকে দেয় বিজেপির সাংসদ বা বিধায়কদের টেনে নিয়ে। এবারেও সেরকম কিছু হবে না তো! জল্পনা ছড়িয়েছে লকেটকে ঘিরে।