নিজস্ব প্রতিনিধি: শিষ্টাচার আর সৌজন্যকে বরাবরই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন তিনি। আর সেই কারণে বাংলার অন্য রাজনেতা-নেত্রীর থেকে ব্যতিক্রমী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সেই সৌজন্যের খাতিরেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে এলেন। যদিও ৪০ মিনিটের মতো ছিলেন তিনি। তবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ও সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে অন্য কোনও বিষয়ে কথা হলেও হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও কোনও পক্ষই এ বিষয়ে মুখ না খোলায় জল্পনা আরও বেড়েছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের দুরত্ব তৈরি হতে শুরু করেছিল। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সেই দুরত্ব কার্যত দু’পক্ষের মধ্যে সঙ্ঘাতের রূপ নিয়েছে। কথায়-কথায় যেমন বিরোধীদের সুরেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন রাজ্যপাল, তেমনই পাল্টা রাজভবন থেকে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারকে টেক্কা দিতে চলতি বছর তো দুর্গারত্ন পুরস্কারও চালু করেছিল রাজভবন। যদিও যে চারটি ক্লাবকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল, সেই ক্লাবগুলির পক্ষ থেকে ওই পুরস্কার প্রত্যাখান করা হয়েছে।
নবান্ন-রাজভবন সঙ্ঘাতের আবহের মধ্যেই বিজয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। পুরো পুজোতেই পায়ের চোটের জন্য ঘরবন্দি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত মঙ্গলবারই প্রথম নবান্নে এসেছিলেন। এদিন ই এম বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে সোজা চলে যান রাজভবনে। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তিনি রাজভবনে পৌঁছন। ৪০ মিনিট পরে বেরিয়েও আসেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে নিজেই গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। এটা আমাদের ভদ্রতা।’