নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাংলার জন্য এখন লগ্মী টানতে চলে গিয়েছেন স্পেনে(Spain)। পা রেখেছেন ফুটবলের শহরে, মেসির শহর, বার্সেলোনায়(Barcelona)। সেখানেই প্রবাসী বাঙালি এবং অবাঙালি ভারতীয়দের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) যেভাবে নিজেকে তুলে ধরলেন তা এখন রাজ্যের বুকে তো বটেই, দেশের রাজনীতিতে রীতিমত জল্পনা ছড়িয়ে দিয়েছে। কেননা মমতা যেভাবে বাংলার উর্ধ্বে উঠে দেশের কথা তুলে ধরেছেন তা শুনে আর দেখে অনেকেই মনে করছেন, এই বক্তব্য কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নয়। ভাবী রাষ্ট্রপ্রধানের বক্তব্য। আর সেই জায়গাতেই উঠে আসছে, মোদি সরকারের কথা। মমতার স্পেন সফরে যাবতীয় Logistics Support দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। আর তা ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে, মোদি কী তাহলে মমতার জমি তৈরি করে দিচ্ছেন বিশ্বের দরবারে!
রবিবার বার্সেলোনায় পা রেখেছেন মমতা। সঙ্গে সফরসঙ্গী হয়েছেন স্পেনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দীনেশ পট্টনায়েক(Dinesh Pattanayak) এবং তাঁর স্ত্রীও। ভারত সরকারের বিনা অনুমতিতে তা সম্ভব হতো না। দীনেশ কলকাতার আইআইএম জোকা থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর করেছিলেন। তা ছাড়া কেরিয়ারের গোড়ার দিকে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের পোস্টেড ছিলেন দীনেশ। তাই বাংলাটা বেশ ভালই জানেন, বোঝেন, বলতেও পারেন। সেই দীনেশকে সঙ্গী করেই মমতা রবিবার যোগ দিয়েছিলেন বার্সেলোনার প্রবাসী বাঙালিদের অনুষ্ঠানে। যদিও প্রবাসী ভারতীয়্রাও সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন মমতাকে দেখতে, তাঁর কথা শুনতে। মমতাও তাই বাংলার উর্ধ্বে উঠে দেশের কথাও শোনালেন। বললেন, ‘দক্ষিণ ভারতের মানুষ তো হিন্দি বলতেই পারেন না। কিন্তু তবু তাঁরা কত স্মার্ট। আবার বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের ভাষার মধ্যে মিল রয়েছে। বাংলাতেও এক এক জেলায়, এক এক রকম টানে মানুষ কথা বলেন। এই সবটা মিলিয়েই তো দেশ।’ বার বার করে তুলে ধরলেন ‘ভারতের ধারণা’র কথা। সর্বধর্ম সমন্বয়, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের কথা।
সরাসরি কোনও রাজনৈতিক কথা না বললেও মমতা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি ঠিক কী বলতে চান। বিরোধী শিবিরের কথাও বললেন, তবে দেশের সরকারকে খাটো করে নয়। বার্সেলোনার অনুষ্ঠানে ছিলেন অনেক প্রবাসী মরাঠি। মমতা তাঁদের জানালেন, তাঁর সঙ্গে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির দুই নেতা শরদ পওয়ার এবং উদ্ধব ঠাকরের দীর্ঘ দিনের সুসম্পর্ক। প্রবাসী ভারতীয়দের বাংলায় বিনিয়োগের আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দুর্গাপুজো দেখার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন মমতা। বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো আবহমান বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা দিয়েছে। সেই পুজো দেখতে সবাইকে আমন্ত্রণও জানান মুখ্যমন্ত্রী। রবিবারের অনুষ্ঠানে ষোলোআনাই ছিল বাঙালিয়ানা। সঞ্চালকেরা বক্তব্য রেখেছেন বাংলায়। চলেছে বাংলা গান। সেখানে খোশমেজাজে নিজেকে মেলে ধরেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে বাংলায় আলাপচারিতাও সেরেছেন। তুলে ধরেছেন বদলে যাওয়া বাংলার কথা। লক্ষ্যণীয় ভাবেই মমতার মুখে একবারের জন্যও মোদি বিরোধী বা কেন্দ্র সরকার বিরোধী একটি শব্দও শোনা যায়নি।